রবিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিদ্যুতের মিটার ও বিল নিয়ে হয়রানি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বিদ্যুতের মিটার ও বিল নিয়ে হয়রানি

সিলেটে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ, মিটার ও বিল নিয়ে সীমাহীন হয়রানি করা হচ্ছে। উচ্ছেমতো বিল হাঁকানো হচ্ছে।

জানা গেছে, দিনের পর দিন গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন। যে কোনো সময় এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটারও আশঙ্কা করছেন জনপ্রতিনিধিরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সঠিক বিদ্যুৎ বিল প্রদান ও সিস্টেম লস বন্ধের দোহাই দিয়ে কয়েক বছর আগে এনালগ মিটার পরিবর্তন করে ডিজিটাল মিটার নিতে বাধ্য করা হয় গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ বিভাগের কড়াকড়িতে প্রায় সব গ্রাহকই এরই মধ্যে নিজেদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মিটার সংযোগ নিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি এই ডিজিটাল মিটারও পরিবর্তন করতে বিদ্যুৎ বিভাগ চাপ দিতে শুরু করেছে। অনেকটা জিম্মি করে ডিজিটাল মিটারের পরিবর্তে গ্রাহকদের বাধ্য করা হচ্ছে প্রিপেইড মিটার নিতে। অভিযোগ উঠেছে, প্রিপেইড মিটারের সংযোগ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বাড়িয়ে দিয়েছেন হয়রানি। ইচ্ছা করে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিলও তারা পরিশোধ করতে পারছেন না। দু-তিন মাস পরপর মনগড়া মোটা অঙ্কের বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে অফিসে গেলে তাদের প্রিপেইড মিটার সংযোগ নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে।

আরও জানা গেছে, সিলেট নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের লামাপাড়া, রায়নগর, সোনারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু বাসা-বাড়িতে প্রিপেইড মিটার আছে। বাকিগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে ডিজিটাল মিটারে। পুরনো মিটারধারী গ্রাহকদের গেল প্রায় তিন মাস ধরে বিলের কাগজ দিচ্ছে না বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ কর্তৃপক্ষ। এর ফলে একসঙ্গে কয়েক মাসের বিল জমে গিয়ে চাপ বাড়ছে গ্রাহকদের ওপর। তাছাড়া বকেয়া ইউনিট বাড়তে থাকায় বেড়ে যাচ্ছে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দামও।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অবদুর রকিব তুহিন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ বিল নিয়ে মারাত্মক সমস্যায় আছেন। বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তারা প্রিপেইড মিটার বসানোর জন্য চাপ দেয়। বিল আটকে রেখে বা মনগড়া বিদ্যুৎ বিল দিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করে প্রিপেইড মিটার সংযোগ নিতে বাধ্য করা মোটেই উচিত নয়।

অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অধীনে প্রায় ৭৮ হাজার গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে প্রায় ৬৪ হাজার গ্রাহক প্রিপেইড মিটার নিয়েছেন। বাকিদেরও প্রিপেইড মিটার নিতে হবে,                 আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’ বিদ্যুৎ বিল আটকে রাখা ও মনগড়া বিদ্যুৎ বিল প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের বিলের কাগজ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আগে আমাদের যে জনবল ছিল, এখন প্রিপেইড মিটারের কারণে সেই জনবল নেই। তাই কিছু ক্ষেত্রে হয়তো বিলের কাগজ পৌঁছাতে একটু বিলম্ব হচ্ছে।’ এদিকে মনগড়া বিদ্যুৎ বিল প্রদানের অভিযোগ তাদের কাছে কেউ করেনি বলে প্রকৌশলী পারভেজ আহমদ দাবি করলেও কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিন জানিয়েছেন, তার এলাকার অনেকে গ্রাহকই এই সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েছেন। অভিযোগ শুনে সমাধান দেওয়া তো দূরের কথা, বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করে তাঁদের তাড়িয়ে দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর