রবিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বালু আর পলিতে ভরাট বিল

হাওরের কান্না : ২

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বালু আর পলিতে ভরাট বিল

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এ উপজেলার পূর্বাংশ উঁচু আর দক্ষিণ পশ্চিমাংশ ক্রমশ ঢালু। প্রায় মধ্যবর্তী স্থানে হাইল হাওরের অবস্থান। পাহাড়ি অঞ্চল বিধায় ছোট ছোট অনেক ছড়া আছে। যেগুলোর বেশির ভাগের উৎপত্তিস্থল ভারতে। ছড়াগুলো পাহাড়ে উৎপত্তি হয়ে হাওরে গিয়ে পতিত হয়েছে।

বর্ষা মৌসুমে এসব ছড়ার পানির সঙ্গে বালু আর পলিমাটি গিয়ে ভরাট হচ্ছে জেলার অন্যতম বড় হাইল হাওর। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এই হাওর খনন না করায় একে একে হাওরের বিলগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কমছে দেশীয় মাছের উৎপাদন। একই সঙ্গে চাষ অনুপযোগী হচ্ছে কৃষি জমি।

পরিবেশবিদদের মতে, হাইল হাওর ভরাটের প্রধান কারণ হলো বনাঞ্চল ধ্বংস করা। পাহাড়ে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে বর্ষা মৌসুমে বনভূমি তার মাটি ধরে রাখতে পারছে না। তাই বর্ষায় উজানের পানির সঙ্গে পাহাড়ের মাটি এসে হাইল হাওর ভরাট হচ্ছে। এ উপজেলায় অসংখ্য ছড়া জালের মতো ছড়িয়ে আছে। আর বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত হতে শুরু হয়ে এ ছড়াগুলো উপজেলার সবকটি চা বাগানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাইল হাওরে গিয়ে পতিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ছড়াগুলো প্রবাহিত হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবেই অনেক ছড়ার দিক পরিবর্তন হয়েছে। আবার অনেক মনুষ্যসৃষ্ট কারণে দিক পরিবর্তন করেছে। এরই মধ্যে অনেক ভরাট হয়ে অস্তিত বিলীন হয়ে গেছে। আবার  অনেক ছড়া ভরাট করেছে মানুষ তাদের নিজেদের প্রয়োজনে। অনেক ছড়াই বর্ষা মৌসুমে নদীর রূপ ধারণ করে।

ভুরভুড়িয়া ছড়া, বিলাশ ছড়া, লাংলিয়াছড়া, উদনা ছড়া বৌলাছড়া, বটছড়া ও কাকিয়াছড়া উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে বিলাশ ছড়া ও উদনা ছড়া মতিগঞ্জ নামক স্থানে এসে একত্রে মিলিত হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর গোপলা নদী নাম ধারণ করেছে।

এই গোপলা নদী দিয়েই প্রবাহিত হয়ে উপজেলার সব পানি হাইল হাওরে গিয়ে পড়ছে। আর হাইল হাওর থেকে এ পানি  বিজলা-সুরমা হয়ে মেঘনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু হাইল হাওর থেকে বিজলা নদীতে পানি যাওয়ার খালগুলোও ভরাট হয়ে গেছে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর