শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অত্যাধুনিক ১৫টি কোচ এলো চট্টগ্রাম বন্দরে

বাংলাদেশ রেলওয়ে

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

অত্যাধুনিক ১৫টি কোচ এলো চট্টগ্রাম বন্দরে

ইন্দোনেশিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে অত্যাধুনিক ১৫টি ব্রডগেজ রেলওয়ের যাত্রীবাহী কোচ। মোট ৫০টি অত্যাধুনিক ব্রডগেজ কোচ পর্যায়ক্রমে যুক্ত হবে। গতকাল এসব কোচ বন্দরে খালাস হওয়ার কথা। বন্দরে খালাসের পর চট্টগ্রামের সিজিপিওয়াইতে এনে কোচগুলো

মিটার গেজ বগির ওপর বসিয়ে স্লো স্পিডে (১০ থেকে ১৫ কিমি বেগে) টঙ্গীতে নেওয়া হবে। তবে এ কোচের বিভিন্ন কাজ শেষ করতে সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে নেওয়া হবে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে ২১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ধাপের মধ্যে প্রথম চালানে এসেছে ১৫টি, দ্বিতীয় চালানে আসবে ১৮টি, তৃতীয় চালানে ১৭টি ব্রডগেজ কোচ আগামী মার্চের মধ্যেই আসবে। প্রথমবারের মতো প্রতিবন্ধীবান্ধব এ রেল কোচগুলোয় থাকছে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট সংরক্ষিত আসন।

এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধীরা হুইল চেয়ারে করে সহজে প্রবেশের পাশাপাশি সহজে ওঠানামাও করতে পারবেন বলে জানান প্রকল্প পরিচালক ও রেলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (উন্নয়ন) হারুন-অর-রশীদ। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মোট ৫০টি ব্রডগেজের মধ্যে ১৫টি আধুনিক ব্রডগেজ কোচ রেলের বহরে যুক্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি কোচগুলোও মার্চের মধ্যে চলে আসবে। ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজের মধ্যে থাকবে প্রথম শ্রেণির এসি স্লিপার কোচ ৪টি, এসি চেয়ার কোচ ৮টি, শোভন চেয়ার কোচ ২৫টি, খাবারের গাড়ি (গার্ডব্রেকসহ) ৮টি, পাওয়ার কার (নামাজ ঘরসহ) ৫টি। প্রতিটি কোচে ৮০ থেকে ৯২টি আসন রয়েছে। তিনি বলেন, নতুন কেনা এসব কোচের প্রথম শ্রেণি বার্থ (কেবিন) বগির ভিতরে থাকবে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। দোতলায় ওঠার জন্য উন্নত মানের সিঁড়ি এবং পানি ও কাপ-পিরিচ রাখার ব্যবস্থা থাকবে। কোচে রাতে জ্বালানো থাকবে উন্নত প্রযুক্তির এলইডি লাইট। এ ছাড়া গভীর রাতে প্রতিটি বগিতে বিশেষ প্রযুক্তির তিনটি করে ড্রিম লাইটও জ্বালানো হবে। রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পূর্ব) মো. মিজানুর রহমান বলেন, কোচগুলো রেলে নতুন মাত্রা যোগ করবে। পাশাপাশি এতে কোচ সংকট কমে যাবে। রেলের পরিবহন বিভাগ ৫০টি ব্রডগেজ কোচের রেক সাজাতে ইতিমধ্যে একটি প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আগের কোচগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে পূর্বাঞ্চল রেলের বেশ কিছু আন্তনগর ট্রেনে নতুন কোচ সংযোজনের পরিকল্পনা করছে রেলওয়ে। তিনি বলেন, প্রথম ধাপের কোচগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর খালাসের প্রক্রিয়া চলছে। এতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টঙ্গী থেকে সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে নেওয়া সম্ভব হবে। একই কথা বললেন পাহাড়তলী ওয়ার্কশপের তত্ত্বাবধায়ক ফকির মো. মহিউদ্দিন। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের মিটার গেজ ও ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ’ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। ৫০টি ব্রডগেজ কোচ ছাড়াও প্রকল্পে ২০০ মিটার গেজ এবং রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ২টি অটোমেশিন ট্রেন ওয়াশিং ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে কম সময়ে অটোমেটিক পদ্ধতিতে দ্রুত সময়ে করা যাবে ট্রেন ওয়াশ। প্রসঙ্গত, নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন রেলওয়ের চলমান প্রকল্পগুলো, নতুন কোচ ও ইঞ্জিন কেনা, চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ সবকিছু কঠোর মনিটর করছেন। এতে রেলের প্রতিটি কাজে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন তিনি। কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণসহ অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতেও দায়িত্বশীলদের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর