সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভূমিমন্ত্রীর আকস্মিক পরিদর্শন

‘অফিসের ফাইল বাসায় কেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ গতকাল দুপুরে আকস্মিকভাবে উপস্থিত হয়েছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। তাঁর কাছে ভূমি অফিস সম্পর্কে নানা অভিযোগ ছিল। এ সময় তিনি বেশ কয়েকজনের অভিযোগ শোনেন এবং জানতে পারেন ভূমি অফিসের ফাইল বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। ভূমি অফিসের কয়েকজনকে ডেকে এনে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। প্রশ্ন করেন, ‘ভূমি অফিসের ফাইল বাসায় কেন?’ ভূমিমন্ত্রীর কাছে বাঁশখালী উপজেলার গ-ামারার বাসিন্দা মো. সিহাব উদ্দিন অভিযোগ করে  জানান, ‘তার ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ফাইল একমাস আগে সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমার কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু সার্ভেয়ার ক্ষতিপূরণের ফাইল তৈরি করে দিচ্ছেন না। তার কাছে গেলে বলেন, ফাইলটি বাসায় রেখে এসেছেন। আরেকবার গেলে বলেন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মূল কপি আনতে। সেটি নিয়ে জমা দেওয়ার পর আজ আসতে বলা হয়। আজ এলে বলেন, ফাইল এবং পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মূল কপি তিনি বাসায় রেখে এসেছেন। এভাবে এক মাস ধরে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।’ এ সময় মন্ত্রী পরমেশ্বর চাকমাকে ডেকে প্রশ্ন করেন, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বাসায় কেন? জবাবে পরমেশ্বর চাকমা বলেন, ‘সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলতেই আমার অফিস সময় শেষ হয়ে যায়। অধিকতর সেবা দিতে বাসায় ফাইল নিয়ে যাই। বাসায় বসে কাজ করি।’ মন্ত্রী ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বিদর্শী সম্বোদি চাকমাকে প্রশ্ন করেন, ‘এত অভিযোগ আসছে কেন? মানুষকে এত হয়রানি কেন?’ এ সময় জেলা প্রশাসক মন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের বাইরে একটা দালাল চক্র আছে। ভেতরেও যে কেউ নেই সেটা বলব না। সার্ভেয়ারদের একটা গ্রুপ আছে। তবে দালালদের আর্থিক বুনিয়াদ এত শক্ত যে, অনেক সময় কিছু করতে পারি না। কিছু করতে গেলেই তারা অভিযোগ করে বসে। আমাদের অফিসের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে বদলি করে দিচ্ছি। একই সঙ্গে চক্রটাকে ধরার চেষ্টা করছি। দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলেছি।’

এ সময় নগরীর কালামিয়া বাজার থেকে আসা আবদুল মোতালেব মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করে জানান, অধিগ্রহণ করা তার জমির ক্ষতিপূরণের জন্য জেলা প্রশাসনে এসে জানতে পারেন, সেই জমির নামজারি অন্যজনের নামে হয়ে গেছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের পর সেটি নিষ্পত্তি করা হচ্ছে না। বরং পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কাগজ নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এ সময় মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমাকে সতর্ক করেন এবং পরে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।  পরে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি চেক দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা দালালদের হাতে যাচ্ছে। কীভাবে এটা হচ্ছে তা বুঝছি না। এজন্য ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড  ট্রান্সফার) পদ্ধতি চালুর চিন্তা আছে। ইএফটি হলে আবেদনের পর টাকা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। সেখানে বিস্তারিত তথ্য থাকবে। এতে হয়রানি থাকবে না।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর