মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নৌকা চান নেতা-পাতিনেতারাও

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

নৌকা চান নেতা-পাতিনেতারাও

আগামী ১০ মার্চ প্রথম দফায় সিলেট জেলার কোনো উপজেলায়ই হচ্ছে না উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। কিন্তু বসে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর এবার উপজেলায়ও কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলার শীর্ষ নেতাদের। ‘প্রতীক নৌকা হলেই বিজয়ী’ এমন ধারণা থেকে এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান নেতা-পাতিনেতা সবাই। অপরদিকে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও বসে নেই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সামাজিক কর্মকা  ও ঘরোয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে নীরবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যানদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের চারজন, বিএনপির ছয়জন ও জামায়াতের তিনজন। গত নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারণে বেশিরভাগ উপজেলায় ভরাডুবি হয় আওয়ামী লীগের। সেই সুযোগে একক প্রার্থী দিয়ে জয়লাভ করে বিএনপি ও জামায়াত। গত নির্বাচনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার একক প্রার্থী নির্ধারণে আগেভাগে মাঠে নামে জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু প্রার্থীদের দীর্ঘ তালিকা ও তাদের অনড় অবস্থান দেখে হতাশ হতে হয় তাদের। প্রার্থী নির্ধারণ করতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও পড়তে হচ্ছে তোপের মুখে। প্রার্থী বাছাই সভায় হামলার মতো ঘটনাও ঘটছে। এনিয়ে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটছে। বাধ্য হয়ে প্রার্থী বাছাইয়ে জেলার নেতারা দ্বারস্থ হতে হচ্ছে কেন্দ্রের। একেক উপজেলা থেকে ৩-৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রে। গত ২৯ জানুয়ারি চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ডাকে জেলা আওয়ামী লীগ। ওই সভায় হামলার ঘটনায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে। একইভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ায় সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় একক প্রার্থী বাছাই করতে ব্যর্থ হয় জেলা আওয়ামী লীগ। কেবলমাত্র জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জে সমঝোতার মাধ্যমে একক প্রার্থী নির্ধারণ  করতে সক্ষম হয়েছেন দলটির নেতারা। বেশিরভাগ উপজেলায় দেখা গেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই জনবিচ্ছিন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের অভাবনীয় জয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা এসব প্রার্থী নিজের গ্রহণযোগ্যতার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন দলীয় প্রতীককে। অনেকেই মনে করছেন নৌকা প্রতীক পেলেই তারা পার হয়ে যাবেন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী বৈতরণী। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকাই স্বাভাবিক। যেসব উপজেলায় একক প্রার্থী নির্ধারণ সম্ভব হয়নি সেসব উপজেলার তিনজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে। কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। এদিকে, দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রতিটি উপজেলায়ই একাধিক প্রার্থী বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাে র মাধ্যমে ভোটারদের নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন। ঘরোয়া বৈঠকের মাধ্যমেও অনেকে গণসংযোগ করছেন। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। নীরবে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দলীয় বা স্বতন্ত্র নির্বাচনের অনুমতি পেলে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেবে। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে সিলেটের সবকটি উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরাই বিজয়ী হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর