মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জোরদার হচ্ছে হলের বাইরে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের দাবি

ডাকসু নির্বাচন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ছাত্রসংগঠনগুলো। তবে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে ভোট কেন্দ্র হলের বাইরে স্থাপনের দাবি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদসহ বেশ কিছু ছাত্রসংগঠনের দাবি, ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও সহাবস্থান নিশ্চিতে’ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে স্থাপন করতে হবে। তবে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ মনে করে, হলে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের শত বছরের ঐতিহ্য রক্ষা করা উচিত। এর আগে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভোট কেন্দ্র হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে স্থাপনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি দেয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। জোটের আওতাভুক্ত সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রমৈত্রীসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলো একই দাবিতে পৃথকভাবে   মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করে। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে ছাত্র ফেডারেশন। ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, হলের গণরুমগুলো ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের দখলে। সেখানে অবস্থানরত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তারা জোর করে মিছিলে নেয়। তাই গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য একাডেমিক ভবনে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। গতকাল একই দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকরিপি দিয়েছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ’। অন্যদিকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ হলে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে। গত ৩০ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন স্বাক্ষরিত পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভোট কেন্দ্র হলের অভ্যন্তরে হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতবর্ষের ঐতিহ্য ও প্রথা।

বিষয়টি নিয়ে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, আমরা নীতিগতভাবে চাই, ভোট কেন্দ্র হলে হোক। ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আওতাভুক্ত অন্যান্য সংগঠনগুলো বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রলীগ (বিসিএল), ছাত্রলীগ (জাসদ) ও ছাত্র সমিতি প্রভৃতি।

উল্লেখ্য, প্রায় ২৮ বছর বন্ধ থাকার পর ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। বহুল আকাক্সিক্ষত এই নির্বাচন নিয়ে দফায় দফায় ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ও পরিবেশ পরিষদ। এসব বৈঠকে ব্যাপকভাবে আলোচনা হয় সহাবস্থানের বিষয়টি । ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বার বার ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে’ বলে দাবি করা হলেও শুরু থেকে ‘গণতান্ত্রিক ও সহাবস্থানের পরিবেশ’ নিশ্চিতের দাবি জানায় ছাত্রদল ও বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলো। আর তখন থেকেই হলের বাইরে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের দাবিও জানাতে থাকে তারা।

তবে, সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সিন্ডিকেটের সভায় গঠনতন্ত্রের প্রচলিত নিয়মানুসারে হলগুলোতেই ভোট কেন্দ্র স্থাপনের বিধান বহাল রেখে ডাকসু গঠনতন্ত্রের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়। সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তকে ছাত্রলীগ স্বাগত জানালেও ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রজোট ও পরবর্তী সময়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর