মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
দলীয় প্রতিপক্ষেই বিব্রত আওয়ামী লীগ

সিলেটে বিদ্রোহীতে বিপাকে ক্ষমতাসীনরা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে বিদ্রোহীতে বিপাকে ক্ষমতাসীনরা

দলীয়ভাবে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে প্রচারণায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের বহিষ্কার করায় বিএনপি নেতা-কর্মীরাও সরে দাঁড়িয়েছেন নির্বাচনী মাঠ থেকে। এমন অবস্থায়ও স্বস্তিতে নেই নৌকার কান্ডারিরা। নির্বাচনে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ৮টিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহীরা। ফলে গত উপজেলা নির্বাচনের মতো এবারও নৌকার ভরাডুবির শঙ্কা করছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে জেলার প্রতিটি উপজেলায় বর্ধিত সভা করেও একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। অবশেষে কেন্দ্রে পাঠানো হয় একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম। কেন্দ্র থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করে দেওয়া হলেও নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়াননি মনোনয়নবঞ্চিতরা। দলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ভোটযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সিলেট সদরে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দুবারের উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিরাজী। এ ছাড়া সদরে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহিষ্কার হয়েছেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাজহারুল ইসলাম ডালিম। আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক আশফাক ও সিরাজী ভাগাভাগি করায় দল থেকে বহিষ্কার হয়েও সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করে ফেলেছেন ডালিম; এমন গুঞ্জন এখন ভোটের মাঠে। দক্ষিণ সুরমায় নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহিদ। এই উপজেলায় আবু জাহিদের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ময়নুল ইসলাম। ফেঞ্চুগঞ্জে একইভাবে নৌকার কা ারি শাহ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম। সবচেয়ে বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন বিদ্রোহী তিন নেতা। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা, ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম আহমদ ও তার পিতা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল বাছির। গোয়াইনঘাটে আওয়ামী লীগের গোলাম কিবরিয়া হেলালের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ ও গোলাপ মিয়া। জৈন্তাপুরে আওয়ামী লীগের লিয়াকত আলীর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ। কানাইঘাটে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আশিক চৌধুরী নির্বাচন না করায় অনেকটা ফাঁকা মাঠ পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মোমিন চৌধুরী। কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশের কারণে তার সহজ জয় কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ছাড়া বিয়ানীবাজারে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবুল কাশেম পল্লব প্রার্থী হয়ে বিপাকে ফেলেছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমানকে।

প্রসঙ্গত, চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯টিই হাতছাড়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের। এবারও শেষ পর্যন্ত একক প্রার্থী না দিতে পারার খেসারত দলটিকে দেওয়া লাগতে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

 

সর্বশেষ খবর