মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

সর্বহারা না থ্রেট মারফুতুল্লাহ?

এক সপ্তাহে রাজশাহীর ৫ শিক্ষককে হুমকি, আতঙ্ক

কাজী শাহেদ ও মর্তুজা নুর, রাজশাহী

সর্বহারা না থ্রেট মারফুতুল্লাহ?

রাজশাহীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. নাসরিন লুবনা। রবিবার সন্ধ্যা ৭.২৪ মিনিটে হঠাৎ-ই তার মোবাইলে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন। তিনি ফোনটি রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে মতিন নামে পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, ‘আমি সর্বহারা কমান্ডার। আমাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে হবে। না দিলে দেখে নেওয়া হবে।’ ড. নাসরিন লুবনার কাছে আসা মোবাইল নম্বরটির (০১৭২৫-৬৬৪৯৭২) সূত্র ধরে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, সে নম্বরটি থেকে তাকে কল করা হয়েছিল, সেটির ব্যবহারকারীর নাম ‘থ্রেট মারফুতুল্লাহ’। সব নিয়ম মেনেই সেটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। শুধু ড. নাসরিন লুবনা নন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষককে গত এক সপ্তাহে সর্বহারা পরিচয়ে চাঁদা দাবি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সর্বহারা নামে এরা কারা-এমন প্রশ্ন এখন শিক্ষাঙ্গনে। হঠাৎ করে শিক্ষকদের টার্গেট করে ফোন করার কারণই বা কি? বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।  রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘সর্বহারা পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হুমকির বিষয়টি আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এই অঞ্চলে এক সময়ে সর্বহারারা সক্রিয় ছিল, তাই সেই বিষয়টিও আমরা মাথায় রেখে তদন্ত করছি।’ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব আলম বলেন, ‘এখন সারা দেশে নানা রকম চক্র রয়েছে। তারা নানাভাবে মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে চাঁদাবাজি করে। বিশেষ করে বগুড়া, গাইবান্ধা ও বরিশালের কিছু চক্র এ ধরনের কর্মকােন্ড  জড়িত থাকার তথ্য আমাদের কাছে আছে। তারা জিন, পরী, সর্বহারাসহ নানা নামে পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে।’ উল্লেখ্য, এক সময় সর্বহারা নামে চরমপন্থিরা নাটোরের আত্রাই,  রানীনগর, নলডাঙ্গা ও রাজশাহীর বাগমারা এলাকায় সক্রিয় ছিল। প্রকাশ্যে তারা মানুষ খুন করেছে। ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তাদের নিষ্ঠুরতার বলি হয়েছে এ অঞ্চলের বহু জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি। তাদের ভয়াবহতা কঠোর হাতে দমনও করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বা ক্রসফায়ারে অনেক চরমপন্থি নিহত হয়েছেন। আবার অনেকেই ওই সময় আত্মগোপনে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ ক্রসফায়ারের ভয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে কাটাচ্ছেন বছরের পর বছর।

সর্বশেষ খবর