ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। বাঙালি জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ইতিহাসে অনন্য একটি দিন। ১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা মার্চে তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের একপর্যায়ে এদিনে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশবাসীকে স্বাধীনতার জন্য কী কী করণীয় তা নির্দেশ করেন। তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ।’ ৭ মার্চের এই ঘোষণায় উজ্জীবিত হয়ে বাংলার জনগণ স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৭ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় যথাযথভাবে দিনটি পালন করা হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক এই দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।

একাত্তরের এদিন বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে সভা মঞ্চে উপস্থিত হন। ময়দান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। ময়দানজুড়ে স্লোগান ছিল- ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা।’ প্রায় ১৯ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু তাঁকে হানাদার পাকিস্তানি সেনারা মেরে ফেললে কীভাবে স্বাধীনতার লক্ষ্যার্জন করতে হবে তার ইঙ্গিত দেন। জনতাকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’ প্রকৃতপক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এরপরই মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।