নাটকের দল আরণ্যক শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন করেছে দর্শকনন্দিত নাটক ‘রাঢ়াং’। গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় দলটির ৪০তম প্রযোজনার এই নাটকটি। এতে সাঁওতালদের জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও সংগ্রামের নানা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মামুনুর রশীদের রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন তমালিকা কর্মকার, শামীমা শওকত লাভলী, জয়রাজ, চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, হাশিম মাসুদ, ছবি, আরিফ হোসেন আপেল, বাপ্পাদিত্য চৌধুরী, সাজ্জাদ সাজু , রুহুল আমীন, সাঈদ সুমন, উর্মি, দীপা, সোহাগ, মামুনুর রশীদ প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাট্য উৎসব : শহীদুল জহিরের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ নিয়ে সাতদিনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাট্য উৎসবের আয়োজন করছে নাটকের দল স্পর্ধা। ১৪ মার্চ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে এই উৎসব। দলটি মোট ১১টি শো করবে। টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ১ হাজার, ৫০০ ও ৩০০ টাকা। আর শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা। নাটকটিতে অভিনয় করবে বিভিন্ন নাট্যদলের কর্মী এবং বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং শিল্পকলা একাডেমি। ২০ মার্চ শেষ হবে সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব।
ভাষা আন্দোলনের অনেক বইয়েই স্বজনপ্রীতি আছে : এদিকে ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও ১১ মার্চ ১৯৪৮’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের অনেক বইয়েই স্বজনপ্রীতি আছে। এ কারণে অনুচ্চারিত ইতিহাসের ফাটল দিয়ে শত্রুরা এসে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করে। গতকাল বিকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও শিল্পকলা একাডেমি এ সভার আয়োজন করে। নাট্যজন রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে এতে আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। গোলাম কুদ্দুছ তার বক্তব্যে বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ২০০ দিনের মাথায় কারাবরণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ১১ মার্চ এক মাইলফলক। এই দিনে বাংলা ভাষার দাবিতে ছাত্র-যুবকরা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। এ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পৃক্ততা নতুনভাবে জানা যাচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের অনেক বইয়ে স্বজনপ্রীতির আভাস পাওয়া যায়। কিন্তু সত্যিকারের অর্থে বলতে গেলে, ভাষা নিয়ে আমরা এখন নানা সংকটে আছি। একটি ভাষা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভাষাবিষয়ক নানা সমস্যার উত্তরণ ঘটানো সম্ভব। রামেন্দু মজুমদার বলেন, ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ লেখক হিসেবে বদরুদ্দীন উমরকে আমরা জানি। তার বইয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে। আবার এও ঠিক, তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়েও গেছেন। হাসান আরিফ বলেন, ইতিহাসের অনেক কিছু আমরা অনুচ্চারিত রাখি।
এর সুবিধা নিয়ে শত্রুরা ফাটল দিয়ে এসে ইতিহাস বিকৃত করতে পারে। ইতিহাসের সেই জায়গাগুলোকে সামনে নিয়ে আসার সময় এসেছে।
এর আগে সমবেত কণ্ঠে বহ্নিশিখার শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘অপমানে সেদিন তুমি জ্বলে উঠেছিলে বর্ণমালা’ এবং ‘ও মুই না বলো অন্য ভাষায়’। অনুষ্ঠানে একুশের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল ও ইকবাল খোরশেদ। সবশেষে একুশের গান পরিবেশন করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা।