রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

কিশোর হত্যার নেপথ্যে নারীর ফোনালাপ!

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

কিশোর হত্যার নেপথ্যে নারীর ফোনালাপ!

সিলেটের ওসমানীনগরে কিশোর মোস্তাফিজুর রহমান মছু হত্যার রহস্যের জট খুলেছে। তিন বন্ধুই তাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এক অপরিচিত মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলার জেরেই খুন করা হয় ওই কিশোরকে। পুলিশ অভিযুক্ত তিন বন্ধুর মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

জানা যায়, ওসমানীনগরের নিজ মান্দারুকা গ্রামের আবদুল মছব্বিরের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মছু (১৫) দিনমজুরের কাজ করত। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়িতে ফিরে আসে। এরপর আবার বেরিয়ে যায়। ওইদিন রাতে সে বাড়িতে ফিরেনি। পরদিন সকালে মান্দারুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মছুর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় মছু হত্যার সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয় একই গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে মছুর বন্ধু মো. জীবনকে (১৬)। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিন বন্ধু মিলে মছুকে হত্যার কথা স্বীকার করে জীবন। সেই সঙ্গে জানায় হত্যার পেছনের ঘটনাও। জীবনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, ওসমানীনগরের খুজগীপুরের এলাইচ মিয়ার ছেলে লিমন (১৬), নিজ মান্দারুকার শরীফ (১৬) এবং মছু ও জীবন একসঙ্গে চলাফেরা করত। প্রায় মাসখানেক আগে জীবনের মোবাইল ফোনে অপরিচিত এক মেয়ের নম্বর থেকে ফোন আসে। এরপর জীবন, লিমন ও শরীফ ওই মেয়ের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কথা বলত। ১০-১২ দিন পর বিষয়টি জানতে পারে মছু। পরে সেও ওই মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চায়। তবে তিন বন্ধু তাকে মেয়েটির ফোন নম্বর দেয়নি। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে মছুর মনোমালিন্য হয়। এর জেরে ২০-২২ দিন আগে মছুকে মারপিট করে ওই তিন বন্ধু। বুধবার অপরিচিত ওই মেয়ের সঙ্গে কথা বলা নিয়ে ফের মছুর সঙ্গে জীবন, লিমন ও শরীফের বিরোধ দেখা দেয়। সেদিনও মছুকে মারধর করে তারা। যাওয়ার সময় তিনজনকে সুযোগ পেলে মারধর এবং অপরিচিত মেয়ের সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি জীবনের বড় ভাইকে বলে দেওয়ার কথা বলে হুমকি দেয় মছু। এরপর মছুকে ফের মারধরের সিদ্ধান্ত নেয় জীবন, লিমন ও শরীফ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মছুকে নিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায়  ঘোরে। এরপর রাত সোয়া ৮টার দিকে মান্দারুকা স্কুলের মাঠে নিয়ে মছুর গলা চেপে ধরে তারা। এ সময় পাথর দিয়ে মছুর নাক, মুখ ও অ কোষে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে নিস্তেজ হয়ে পড়লে রশি এনে তার গলায় গিঁট দিয়ে টানতে থাকে জীবন ও লিমন। মছুর মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে তারা। পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, মামলার এজাহারে তিন বন্ধুর নাম যুক্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার জীবন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর