শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

পাহাড়ে লাশের মিছিল

বিচারের আওতায় আসছে না খুনিরা!

কবির হোসেন সিদ্দিকী, বান্দরবান

পাহাড়ে লাশের মিছিল

পাহাড়ে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। চারটি আঞ্চলিক সংগঠনের আধিপত্য বিস্তার, অন্তঃকোন্দল, গহিন অরণ্যে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলিবিনিময়, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, চাঁদাবাজির ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বসহ নানা ইস্যুতে প্রতিনিয়ত পাহাড়ে ঝরছে তাজা প্রাণ। সংগঠন চারটি হলো- জেএসএস, জেএসএস (এম এন লারমা গ্রুপ), প্রসিত বিকাশ চাকমার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ ও সদ্যঘোষিত ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)। জুম্ম অধিকারের নামে এ চারটি সংগঠনের প্রতিনিয়ত নৃশংস ঘটনায় তিন পার্বত্য জেলায় সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালিদের কাছে পার্বত্য এলাকা আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া গহিন অরণ্যসহ শহরের আশপাশে এসব ঘটনা ঘটায় স্থানীয় আনসার-পুলিশও অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত এসব অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীর হামলার আশঙ্কা ও আতঙ্কে থাকে। পাহাড়ে দুষ্কৃতদের সর্বশেষ শিকার বিলাইছড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুরেশ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা। সন্ত্রাসীরা মঙ্গলবার তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ হত্যাকাে র ঘটনায় জেএসএস (সন্তু লারমা গ্রুপ)-কে দায়ী করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এর আগের দিন সোমবার বাঘাইছড়িতে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয় উপজেলা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে সাতজন নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যকে। ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির পর তিন পার্বত্য জেলায় এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৮৮০ জনের বেশি। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিশু-মহিলা কেউ বাদ পড়েনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পার্বত্য এলাকায় বেশির ভাগ ঘটনায় থানায় কেউ মামলা করে না। অনেকেই মামলা না করে ‘খুনের বদলে খুন’ নীতি গ্রহণ করে। আবার নীরবে স্বজন হারানোর কান্নায় দিনাতিপাত করার পথ বেছে নিচ্ছে সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালিদের অনেকে। বিশেষ করে পাহাড়ি সংগঠনগুলোর সংঘর্ষে নিহতের শিকাররা কখনই মামলা করার সাহসও পায় না। আর মামলা না করার ফলে সচরাচর বিচারের আওতায় আসছে না খুনি ও সন্ত্রাসীরা।

তিন পার্বত্য জেলায় তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মূলত সংঘাত-সংঘর্ষ চলে। ২০১২ সাল থেকেই পার্বত্য জেলা তিনটিতে খুন-অপহরণ-ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি বাড়তে থাকে। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ওই বছরের ৩ ও ৪ জুলাই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম এলাকায় দুটি সংগঠনের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে; যাতে প্রাণ হারান চারজন। আহত হন অনেক কর্মী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর