বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

মর্গে থাকা লাশের পেটে ১৫০০ ইয়াবা

কপ্টারে পাচারের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় হাসপাতালে ফেলে যাওয়া এক নারীর লাশের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে চিকিৎসকরা তার পেটে প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় দেড় হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। আনুমানিক ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর পরিচয় জানা যায়নি। যারা তাকে নিয়ে এসেছিলেন, তারাও রেখেই সটকে পড়ায় তাদের পরিচয়ও মেলেনি।

নেশার ট্যাবলেট ইয়াবা পেটের ভিতরে নিয়ে পাচারের কয়েকটি ঘটনা এর আগে ধরা পড়লেও মৃত কারও পেটে ইয়াবা পাওয়ার ঘটনা আগে শোনা যায়নি। গতকাল দুপুরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে ওই নারীর ময়নাতদন্ত করা হয়। তখনই তার পেটে ইয়াবা পাওয়া যায় বলে কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান এ এম সেলিম রেজা সাংবাদিকদের জানান।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে বুধবার এই নারীর লাশ এসেছিল পাশের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে। তা নিয়ে এসেছিল শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, সোমবার সন্ধ্যার আগে দুজন লোক এই নারীকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখে মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা দেওয়ার পর ওই দুজন অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার কথা বলে বেরিয়ে গিয়ে আর ফেরেনি। মঙ্গলবার সারা দিনও কেউ লাশ নিতে না আসায় পুলিশ তা গ্রহণ করে। এরপর গতকাল ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় সোহরাওয়ার্দীর মর্গে। ডা. সেলিম রেজা বলেন, ময়নাতদন্ত করার সময় তার স্টমাকে বেশ কিছু প্যাকেট পাওয়া যার, যার ভিতরে ইয়াবা ছিল। এদিকে বেসরকারি হেলিকপ্টারকে ইয়াবা পাচারের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।  মন্ত্রণালয় বলছে, মাদক ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার থেকে হেলিকপ্টারে করে মাদক চোরাচালানের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য দিয়েছে। যেহেতু হেলিকপ্টারের যাত্রীদের তেমন কোনো নিরাপত্তা বলয়ের মাধ্যমে যেতে হয় না এবং পণ্য পরিবহনের সময় স্ক্যানিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নেই, তাই এতদিন ব্যাপারটি কারও নজরে আসেনি। এ তথ্য জানার পর গতকাল সকালে সচিবালয়ে বেসরকারি আটটি প্রতিষ্ঠানের হেলিকপ্টারের মালিক ও তাদের প্রতিনিধি, বিমান ও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাদক পরিবহন প্রতিরোধে তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে মাদক পরিবহন হচ্ছে। স্ক্যানিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ পাচ্ছে। এজন্য হেলিকপ্টার মালিকদের ডেকেছিলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দিতে আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকেও মাদক পরিবহন প্রতিরোধে হেলিকপ্টার ব্যবহারে সতর্কতা জারি করতে বলা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর