শিরোনাম
রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
সংলাপে আইনমন্ত্রী

ফেক নিউজ প্রচার বন্ধে ভূমিকা রাখতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ফেক নিউজ প্রচার ও প্রকাশ বন্ধে সরকারের একার পক্ষে সফলভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলোরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, ফেক নিউজের প্রভাবে সমাজে সাম্প্রদায়িক, জাতিগত, ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। গতকাল রাজধানীর কসমস সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘ভুয়া খবর ও ঘৃণামূলক বক্তব্য, কারণ ও পরিণাম : কীভাবে তা আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কসমস গ্রুপের জনকল্যাণমূলক সংস্থা কসমস ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যান্ড ইন্টারনেট ডেমোক্র্যাসির (এএআইডি) সভাপতি ও আইটি আইন বিশেষজ্ঞ ড্যান শেফেট অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ফেক নিউজ বা ভুয়া খবর বাংলাদেশে নতুন কোনো শব্দ বা ধারণা নয়। ‘খবর’ ও ‘ভুয়া খবর’ অনেকটা ‘সত্য’ ও ‘মিথ্যা’র মতোই সমান্তরালভাবে যুগ যুগ ধরে প্রচার ও প্রকাশ হয়ে আসছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী অনেক ফেক নিউজ ছড়িয়েছিল। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দেশে ও বিদেশে অনেক ফেক নিউজ (ভুয়া খবর) ছড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রধানত পাঁচটি উদ্দেশ্যে ফেক নিউজ চর্চা করা হয়। এগুলো হচ্ছেÑ সাম্প্রদায়িক গুজব ছড়ানো, উগ্র রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মিথ্যাচার প্রচার, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা, জনমতে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং অবৈজ্ঞানিক জল্পনা-কল্পনা প্রচার করার জন্য। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব প্রভৃতি সাংবাদিকতা-বহির্ভূত যোগাযোগমাধ্যম ভুয়া খবর প্রচারের বড় প্লাটফর্ম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিপদের দিক হলো- এসব প্লাটফর্ম থেকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য অতি দ্রুতগতিতে সংবাদমাধ্যমগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলো, যাদের অধিকাংশই তথ্যের সত্য-মিথ্যা খতিয়ে দেখে না।

আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশসহ অনেক দেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যম এখন সংবাদের প্রাথমিক উৎস হিসেবে ফেসবুক-টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে থাকে। তবে, কাজটা দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারি দক্ষতার সঙ্গে করলে ঝুঁকির আশঙ্কা কম থাকে। তিনি বলেন, ফেক নিউজের প্রচার ও প্রকাশ বন্ধে সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন, সাইবার আদালত গঠন এবং গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ সেল গঠনের পাশাপাশি অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য রেজিস্ট্রেশনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং অনলাইন নীলিমালা প্রণয়নের কাজ করছে। এ ছাড়া ফেক নিউজের প্রচার ও প্রকাশ বন্ধে বিটিআরসি, আইসিটি বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর