শিরোনাম
বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

মুক্তিপণের জন্য শিশুকে হত্যা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তিপণের জন্য শিশুকে হত্যা!

মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা না দেওয়ায় ৮ বছরের শিশু মনিরুল ইসলামকে শ্বাসরোধে হত্যার তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এ ঘটনায় মসজিদের ইমামসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা ডেমরার বাঁশেরপুল ডগাইর এলাকার নূরে আয়েশা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার নির্মাণাধীন মসজিদ থেকে ওই শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। এ রহস্যের আদ্যোপান্ত জানাতে আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের কথা রয়েছে।

জানা যায়, মনিরুল ইসলাম ওই মাদ্রাসারই ছাত্র। সে ডেমরার ডগাইর নতুনপাড়া এলাকার সামসু মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া সাইদুল হকের ছেলে। সাইদুল মেয়েদের হাতব্যাগের ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেরার বিটগর গ্রামে। 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট ও শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই শিশু রবিবার সকাল ৭টার দিকে প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসায় পড়তে যায়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় তার পরিবার ওইদিন রাতে এলাকায় মাইকিং করে। রাত ৮টার পরে শিশুটির বাবার কাছে অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে এক ব্যক্তি। এ সময় তার কাছে মনিরুলের মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়। আর মুক্তিপণের ওই টাকা আয়েশা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার নির্মাণাধীন মসজিদের খাটিয়ার নিচে রাখতে বলা হয়। রাত ২টার দিকে সাইদুল হক তার ভাইসহ নূরে আয়েশা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার ইমামের কাছে ১ লাখ টাকা রেখে আসেন। তখন তারা ইমামের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন। যাতে টাকা নেওয়ার সময় ইমাম অপহরণকারীকে চিনতে পারেন। তবে ওই রাতে অপহরণকারীরা টাকা নিতে আসেনি।

সোমবার বিকালে কালবৈশাখী ঝড়ের পর অপহরণকারীরা সাইদুলের মোবাইলফোনে কল করে মনিরুলের মৃত্যুর কথা জানায়। এ খবরে থানা পুলিশ মনিরুলের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় শিশুটির মুখে রক্ত দেখা যায়। পরনে ছিল সাদা-নীল রঙের ছাপা পাঞ্জাবি ও ফুল প্যান্ট। এরপর এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। শত শত মানুষ খুনির ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পুলিশের ধারণা, অপহরণের পর শিশুটি যাতে চিৎকার করতে না পারে তাই মুখে গামছা পেঁচিয়ে রাখে। এতে শ্বাসরোধ হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়। 

ডেমরা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নুর আলম সিদ্দিকী এ প্রতিবেদককে জানান, মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। মামলায় মসজিদের ইমাম আবদুল জলিল হাবিব, তার দুই ছাত্র আসলাম ও তোহাকে আসামি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর