গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে, তবে এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ছে। তবে এটি বাড়ানো নয়, সমন্বয় করতে হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের কোনো ক্ষতি হবে না। যদি সমস্যা হয় তাহলে সরকার তা দেখবে।

গতকাল রাজধানীর মতিঝিল ঢাকা চেম্বারে ‘জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি : শিল্পায়নে প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন নসরুল হামিদ।

নসরুল হামিদ বলেন, দেড় বছর আগে আমরা এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, বিজিএমইএসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বসেছিলাম। তখনই গ্যাসের দাম সমন্বয়ের কথা জানিয়েছিলাম। এখন দাম সমন্বয় করতে যাচ্ছি। আগামী পাঁচ বছর পর্যায়ক্রমে দাম সমন্বয় করা হবে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৯ টাকার গ্যাস ৬ টাকায় দিচ্ছি। অনেক  ক্ষেত্রে দুই টাকা ইউনিটে বিদ্যুৎ বিক্রি করছি। অর্থাৎ প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহককে দুই টাকায় বিদ্যুৎ দিচ্ছে সরকার। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বছরে জ্বালানি খাতে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘কারখানায় স্থাপিত ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে জাতীয়ভাবে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে। বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ালে একদিকে দাম কমবে অন্যদিকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ পর্যন্ত ৬ হাজার  মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত রয়েছে। ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ৮ হাজার  মেগাওয়াট। ব্যবহার না করেও উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের খরচ বহন করতে হচ্ছে। এর দায় গ্রাহকের ওপর পড়ছে। তাই ব্যবসায়ীরা কারখানায় বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ান, দাম কমে আসবে।’

পিক ও অফপিক আওয়ারে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যবধান। এতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। এটা কমানো প্রয়োজন। অর্থাৎ অফপিক আওয়ারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে সেক্ষেত্রে দাম কমানো সম্ভব হবে বলে জানান জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সরকার ২০১০ সালে মাস্টারপ্ল্যান করেছে। প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি, এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা গ্যাসের দাম না বাড়ানোর পাশাপাশি কল-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানান।