শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতা নিরসনে আশার আলো

রশিটানাটানির অবসান

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) অতীত থেকেই নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করে আসছে। কিন্তু গত বছর সরকার জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প দেয়।

এরপর চসিক নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল, নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কার কাজ বন্ধ রাখে। এ নিয়ে চসিক-চউকের মধ্যে মৃদু দ্বন্দ্বও দেখা দেয়। অবশেষে চসিক-চউক সমন্বয় করে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজের সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুই সংস্থা ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকও করেছেন। এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে আশার আলো দেখা দিয়েছে বলে জানা যায়। 

নগরবাসীর অভিযোগ, দায়িত্বশীল সরকারি সংস্থাগুলোর রশিটানাটানির চরম খেসারত দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। কোন সংস্থা কোন দায়িত্ব পালন করবে তা স্পষ্ট থাকলেও বাস্তবায়ন হয় না। ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনের মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুও দুই সংস্থার রশিটানাটানির কবলে পড়ে। তবে এখন তারা এক টেবিলে বসে সমন্বয় করে কাজ করার সিদ্ধান্তে জলাবদ্ধতা নিরসনে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পে যুক্ত করা হচ্ছে চসিক মেয়র ও কাউন্সিলরদের। চার জোনে ভাগ করা হয়েছে ৪১ ওয়ার্ডকে। প্রতিটি জোনের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের পরামর্শভিত্তিক চলবে মেগা প্রকল্পের কাজ। জরুরি ভিত্তিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সংস্কার         করা হবে খাল-নালা-নর্দমা। চিহ্নিত করা হবে জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিক-চউকের দ্বৈত কাজ। চলতি মাসেই হবে চসিক ও সেনাবাহিনীর যৌথ সমন্বয় সভা।

 বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে অনগ্রাউন্ড অ্যাসেসমেন্ট করে কাজ পরিচালনায় জরুরি টিম গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। চউক সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করেছে নগরের ৩৬ খালের ড্রইং ডিজাইন।

জানতে চাইলে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে চউকের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নেও আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে এ ব্যাপারে চউক সমন্বয় করতে আগ্রহী না হওয়ায় সমস্যা হয়। কিন্তু এখন তারা সমন্বয় করতে আগ্রহ দেখিয়ে বৈঠক করেছে। বর্ষার বাকি আর মাত্র দুই মাস। তাই আগামী এক মাসের মধ্যেই কার্যকর সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করব। বর্ষার আগেই আমাদের খাল-নালা সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সব ধরনের নাগরিক দুর্ভোগে নাগরবাসী চসিককে দোষে। সমস্যার জন্য জনগণ মেয়রকেই দোষারোপ করে। তাই আমরাও চেষ্টা করি নগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে। ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ৩০২ কিলোমিটার নালা সংস্কারের জন্য চিহ্নিত করা হয়।’

জানা যায়, চউক নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকায় ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড (ইসিবি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের আওতায় মহেশখাল, বির্জা খাল, ডোমখালী খাল, চাক্তাই খাল, খন্দকিয়া খাল, রাজাখালী খাল-২, মহেশখালী খাল, মির্জা খাল, নোয়া খাল, ফিরিঙ্গিবাজার খাল, গয়নাচরা খাল ও টেকপাড়া খালের ডিজাইন প্রণীত হয়েছে। ১১টি খালের ওপর ব্রিজের কাজ চলমান।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর