মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, লালদিয়া টার্মিনাল, কর্ণফুলী কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি মিরসরাই-সীতাকুন্ডে -ফেনী নিয়ে দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরকে সহায়তা দিতে সীতাকুন্ডে আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ।
গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে ১৩২তম বন্দর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বন্দর চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান। প্রতিবছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়ে থাকে। বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে টার্মিনাল হলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে তিনগুণ। প্রকল্প এলাকার ৬৭ একর জমি বন্দরকে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটিতে ৮০৩ একর খাস জমি বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বে টার্মিনালে ১ হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস, ১ হাজার ২২৫ ও ৮০০ মিটারের দুটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে ইয়ার্ড, ট্রাক টার্মিনাল ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বন্দর চেয়ারম্যান জানান, ২০১৭ সালে জাহাজের সর্বোচ্চ গড় অবস্থানকাল ৭-৮ দিন পর্যন্ত ছিল। এরপর কি গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজনের ফলে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে গতি বেড়েছে। তাই জাহাজকে কম সময় জেটিতে অবস্থান করতে হচ্ছে। বহির্নোঙরে আসার পর সরাসরি জেটিতে ভেড়ার রেকর্ডও হয়েছে। সাধারণ পণ্যের জাহাজ শূন্য থাকায় সেখানেও কনটেইনার জাহাজ ভেড়ানো হচ্ছে। ফলে ১২-১৪টি কনটেইনার জাহাজ একসঙ্গে হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে।
২০১৭ সালে বন্দরে জাহাজ আসে ৩ হাজার ৩৭০টি, ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৪৭টি। জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় কমার সঙ্গে সঙ্গে ইয়ার্ডে কনটেইনার ডুয়েল টাইম কমে এসেছে। ২০১৭ সালে ২০ ফুট দীর্ঘ ২৬ লাখ ৬৭ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং করলেও ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৩ হাজার। গড় প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ।এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, গত সেপ্টেম্বরে নতুন উদ্যমে কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ৪২ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের এ প্রকল্পের কাজ করছে। ৪ বছর মেয়াদি এই কাজে বন্দরের খরচ হবে ২৪২ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর খন্দকার আকতার হোসেন, সচিব মো. ওমর ফারুকসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।