বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

জিডিপির টার্গেট ৮ দশমিক ২ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিডিপির টার্গেট ৮ দশমিক ২ শতাংশ

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) ৮ দশমিক ২ শতাংশ এবং চলতি বছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতি বছর ১ শতাংশ মানুষকে করের আওতায় আনতে ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত ১ শতাংশ হারে বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। বর্তমানে দেশের মাত্র ১১ শতাংশ মানুষ আয়কর দেয়। আর সামগ্রিকভাবে ১৪ শতাংশ মানুষ সরকারকে নানাভাবে রাজস্ব দেয়। এ সংখ্যাটি কমপক্ষে ২০ শতাংশ হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে সরকার। এজন্য আগামী পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৫ শতাংশ আটকে রাখার চেষ্টা থাকবে আগামী বাজেটে। বাজেটের মোট আকার হতে পারে ৫ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ধরা হতে পারে ৩ লাখ ৭২ হাজার কোটি টাকা। জোর দেওয়া হবে গ্রামীণ অঞ্চলের উন্নয়নকে। সেই সঙ্গে চলমান মেগা প্রকল্পগুলোকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে আগামী বাজেটে।

গতকাল বাজেটের সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রার বিনিময় হারসংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রাক্কলিত এ বাজেট সর্বকালের সর্ববৃহৎ। ব্যয়ের চাপ মেটাতে প্রাক্কলিত রাজস্ব ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক্কলিত আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর-বহির্ভূত আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া রাজস্ব ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো বাজেট দিতে যাওয়া অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি প্রথম কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠক। বৈঠকে মন্ত্রী প্রথমেই চলতি অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে রাজস্ব খাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

 কারণ, গত সাত মাসে এনবিআরের গ্রোথ রেট ৭ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি যোগ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে এনবিআরের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক, যা বাজেটের আয়ের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। এতে ঘাটতির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যেতে পারে। এ সময় তিনি এনবিআরের কর্তাব্যক্তিদের কাছে ইসিআর মেশিন কেনার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান। এ ব্যাপারে এনবিআরকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের কথা বলেন তিনি।

বৈঠকের একটি সূত্র জানান, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ, এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি, প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য, সামগ্রিক বাজেট বাস্তবায়ন এবং আগামী বাজেটের প্রাক্কলন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে জোর দেন অর্থমন্ত্রী। সূত্র জানান, বৈঠকে আলোচনা করা হয়, আগামী বাজেটের সামগ্রিক ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। বৈদেশিক সহায়তা বাড়ানো হবে। এতে ব্যাংক খাত থেকে সরকার ঋণ নেবে তুলনামূলক কম, যা বেসরকারি বিনিয়োগে গতির সঞ্চার করবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিও জোর দেওয়া হয়। বিশেষ করে চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ সময়মতো শেষ করতে পারলে কর্মসংস্থান বাড়বে, যা জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করে সরকার। আগামী বাজেটে গ্রামীণ জনপথের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, রপ্তানি খাতকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। গ্রামেই যেন মানুষের কর্মসংস্থান হয় সে ধরনের প্রকল্প নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর