শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণে হাই কোর্টের ১১ দফা নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর টাওয়ার থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে হাই কোর্ট। পাশাপাশি রেডিয়েশন বিষয়ে সমীক্ষা করে চার মাসের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রেজা ই রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক। হাই কোর্টের ১১ দফা নির্দেশনা হচ্ছে- মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন মাত্রা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১০ ভাগের এক ভাগ করতে হবে; মোবাইল টাওয়ার বাসার ছাদ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক, জেল, খেলার মাঠ, জনবসতি এলাকা, হেরিটেজ ও প্রতœতাত্ত্বিক এলাকা ইত্যাদি স্থানে না বসানো এবং যেগুলো বসানো হয়েছে তা অপসারণ করা; রেডিয়েশন মাত্রা যেন বেশি না হয়, সে ব্যাপারে অতিরিক্ত নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেওয়া; টাওয়ার বসাতে জমি অধিগ্রহণে কোনো বাধা আছে কি না বা বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করা; টাওয়ারের রেডিয়েশন মাত্রা বিটিআরসি ও লাইসেন্সগ্রহীতা দুজনকেই স্বাধীনভাবে আইটিইউ এবং আইইসির মান অনুসারে পরিমাপ করা; কোনো টাওয়ারের রেডিয়েশনের মাত্রা বেশি হলে তা অপসারণ করে নতুন টাওয়ার বসানো; টাওয়ার ভেরিফিকেশন মনিটর পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিটিআরসির দায়দায়িত্ব বাধ্যতামূলক করা; বিটিআরসি স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল গঠন করা; বিটিআরসি অন্যদের নিয়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি গঠন করবে; লাইসেন্সধারীকে প্রতি ছয় মাসে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে; মোবাইল সেটে দৃশ্যমানভাবে এসএআরের মান লিখতে হবে; সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সধারী প্রতিটি রিপোর্ট বা রেকর্ড পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করবে; সংশ্লিষ্ট অথরিটিকে আদালতের আদেশ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের রিপোর্ট সম্পর্কে আরও স্টাডি করে প্রতিবেদন দিতে হবে। রায়ের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘২০১২ সালে মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারিত হয় একটি বেসরকারি টেলিভিশনে। এরপর এ ধরনের প্রতিবেদন সংযুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে হাই কোর্টে রিট দায়ের করি।’ তিনি বলেন, ‘ওই রিটের শুনানি নিয়ে মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশন মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কয়েকটি মোবাইল ফোন টাওয়ার পরিদর্শন করে রেডিয়েশন বিষয়ে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি আদালত রুলও জারি করেছিলেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত গতকাল এ রায় দেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর