বুধবার, ৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে চার লেনের কী হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী নগরীর ব্যস্ততম সড়ক তালাইমারী-আলুপট্টি হয়ে সাহেববাজার। এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে প্রকল্প নেয় সিটি করপোরেশন। কিন্তু চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ এখনো শুরুই হয়নি, অথচ শেষের পথে এসে দাঁড়িয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। কথা ছিল, এ বছরের মধ্যেই শেষ হবে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি থেকে তালাইমারী সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ। কিন্তু এখনো কাজই শুরু করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। আর নাগরিক সংগঠনের নেতারা বলছেন, প্রকল্প থমকে থাকলে সরকারের যেমন খরচ বাড়ছে, উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

মূল শহরে চলাচলের প্রধান পথ হিসেবেই পরিচিত তালাইমারী-আলুপট্টি সড়ক। দেড় লেনের এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে ২০১২ সালে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠায় সিটি করপোরেশন। তবে ১২৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি একনেক সভায় ছাড় পায় ২০১৫ সালের মে মাসে। আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে থাকার কথা প্রশস্ত ফুটপাত, দুই পাশে ড্রেন, আইল্যান্ড ও সুদৃশ্য আলোকায়ন। কিন্তু থমকে আছে এসব কাজ। ফলে ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে এক রকম ঠাসাঠাসি করে চলছে যানবাহন। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। অথচ প্রকল্প পাস হওয়ার পরও কেন কাজ শুরু হলো না তা নগরবাসীর প্রশ্ন। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর রাজশাহী আঞ্চলিক সমন্বয়ক সুব্রত পাল বলেন, প্রকল্প এভাবে আটকে থাকায় সরকারি টাকা অপচয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। পাশাপশি সরকারের উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এদিকে প্রকল্পের এমন দশায় ক্ষুব্ধ সিটি মেয়র। এ নিয়ে     সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ থেকে গত ৭ এপ্রিল একটি জরুরি চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের। এতে বলা হয়েছে, মহানগরীর কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আলুপট্টি মোড় হতে বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম মন্থর হওয়ায় মেয়র গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অধিগ্রহণসংক্রান্ত সব কার্যক্রম মে মাসের মধ্যেই শেষ করতে মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতি পাঁচদিন পর পর কাজের অগ্রগতি প্রকল্প পরিচালককে জানাতে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণের কাজে কিছু জটিলতা থাকায় প্রকল্পে ধীরগতি হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে প্রায় ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। তবে মূল কাজ শুরু করতে আরও তিন মাস সময় লাগবে বলে জানান তিনি। সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, তিনি আগের মেয়াদে মেয়র থাকাকালীন এই সড়কটি প্রশস্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৩ সালের পর যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মনোযোগী হননি। এ কারণে এখন পর্যন্ত প্রকল্পটি শেষ করা গেল না। তবে শিগগিরই যাতে প্রকল্পটি শেষ করা যায়, সে জন্য তিনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর