বুধবার, ৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাঁধ নির্মাণে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ মোকাবিলায় সমন্বিত ব্যবস্থা থাকায় সফলতার সঙ্গে ফণী মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে শক্ত ও মজবুত বাঁধ নির্মাণ করা না হলে বন্যা মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধান আসবে না বলে তারা মত প্রকাশ করেন। এ ছাড়া আগামীতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁধ নির্মাণের কাজ না দিয়ে এক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দেন তারা। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ফণী পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম সম্পর্কে পর্যালোচনা সভায় বক্তারা এ মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের বড় দুর্যোগ মোকাবিলায় মন্ত্রণালয় ও বিভাগের করণীয় তুলে ধরা হয়। এতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান প্রমুখ অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ফণী মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের সাইক্লোন সেল্টারগুলো আরও মজবুত করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাই স্কুল, মসজিদকে আরও শক্তিশালী ও মজবুত করে তৈরি করে সেগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। রাস্তার পাশের বহু বছরের পুরনো অপ্রয়োজনীয় গাছ কেটে নতুন গাছ লাগাতে হবে যেন দুর্যোগে গাছ পড়ে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাটা ক্ষতি করতে না পারে। আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, যোগাযোগ হলো সমন্বয়ের মূল হাতিয়ার। এবার অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, এবার দুর্যোগে গণমাধ্যম অত্যন্ত সচেতন ভূমিকা রাখায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সমন্বয় করে খুব ভালোভাবে কাজ করেছে। তিনি বলেন, খুলনা, সাতক্ষীরা পরিদর্শনে গেলে সেখানের জনগণ বলে আমরা ত্রাণ চাই না। আমরা বেড়িবাঁধের সংস্কার চাই। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, আমরা যতই ব্যবস্থা নেই না কেন মজবুত করে বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। বাঁধের সংস্কারের জন্য যত দ্রুত বরাদ্দের নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে তত দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের যেসব বাঁধ রয়েছে, তার অধিকাংশ ১৯৭০ সালের দিকে নির্মিত। যে কারণে বর্তমানের চাহিদা অনুযায়ী নিচু। এই বাঁধগুলো দ্রুত মেরামত ও সংস্কার করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্য সামর্থ্য অনেক ছিল। কিন্তু সমন্বয়নের অভাবে তিনি পরাজিত হন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক দুযোর্গ মোকাবিলায় যেখানে হিমশিম খায়, আমরা সেখানে সফল হয়েছি। কারণ আমাদের কাজের যথেষ্ট সমন্বয় থাকার ফলেই আমরা সফল।

অন্যান্য বক্তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বাঁধগুলো আরও উঁচু করা, দ্রুত সংস্কার, এ জন্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ানোর ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে আগামীতে যে কোনো উন্নয়ন কাজ বিশেষ করে বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করা এবং পিপিপির মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করার তাগিদ দেন।

সর্বশেষ খবর