বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

দিনে দালালের দখলে রাতে সব অরক্ষিত

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে আঁতাত করেই চলে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অবৈধ ব্যবসা। নানা কৌশলে গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে সর্বস্ব লুট করা হয়। চিকিৎসকরা এ কাজে জড়িত থাকায় ‘দালাল প্রথা’ বন্ধ না হয়ে আরও বাড়ছে। একইভাবে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি হয়ে পড়েছে রোগীরা। চিকিৎসককে নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে রোগীর প্রেসকিপশনে ‘অপ্রয়োজনীয় ওষুধ’ লেখাতে বাধ্য করে এসব প্রতিনিধিরা। আবার ওই ওষুধ প্রেসকিপশনে লেখা হয়েছে কিনা তা’ চিকিৎসকের কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে তারা পরীক্ষাও করেন।  সরেজমিনে দেখা যায়, মোটরসাইকেল প্রতিরোধের নামে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নির্মাণ করা হয়েছে ‘স্টিলের প্রতিবন্ধকতা’। একজন মুমূর্ষু রোগীকে ওই বাধা টপকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠাতে বা নামাতে যথেষ্ট বেগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া চিকিৎসকদের সময়মতো উপস্থিত না হওয়া, সরকারি চাকরীজীবীদের নিয়ন্ত্রণে বহিরাগতদের নিয়োগ, নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের বদলে ফ্রি সার্ভিস কর্মীদের দিয়ে সেবা প্রদানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খুলনার রূপসা উপজেলার বাসিন্দা সাঈদুর রহমান জানান, রাতের বেলা পুরোপুরি অরক্ষিত থাকে হাসপাতালটি। চিকিৎসক-নার্সদের পাওয়া যায় না।  জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি-অনিয়মে সরকারি হাসপাতালটিতে সেবার মান কমেছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ন্ত্রণে থাকে বহির্বিভাগ। কৌশলে চুরি করা সরকারি ওষুধ বাইরে পাচার করছে ফ্রি সার্ভিস কর্মীরা। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, চিকিৎসকদের নৈতিকতার অভাবে প্রেসকিপশনে ‘অপ্রয়োজনীয় ওষুধ’ লেখা হয়। এটি বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল নিয়ন্ত্রণেও নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর