বুধবার, ২২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরিচালক পদ সৃষ্টিতেই ১১ বছর! চিকিৎসক সংকটে ভোগান্তি

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছিল ২০০৮ সালে। প্রায় ১১ বছর পর ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসকের ১৬৪টি পদ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়েছে একই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে। তবে উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়কসহ ১৬১ জন চিকিৎসকের শূন্য পদে এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এদিকে চিকিৎসক সংকটে ভর্তি হওয়া রোগীর ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। প্রতিদিন হাসপাতালে গড়ে ৮০০ থেকে এক হাজার রোগী সামলাতে চিকিৎসক-নার্সদের হিমশিম খেতে হয়। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে প্রতি ১০ জন রোগীর বিপরীতে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, অনুমোদিত চিকিৎসকের শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া হলে সেবার মান বাড়বে। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ড সব জায়গাতেই রোগীর ভিড়। চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসাধীন গরিব রোগীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। খুলনার রূপসা উপজেলা থেকে আসা রোগী রেহানা পারভীন আক্ষেপ করে বলেন, ‘এখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের খুব অভাব।

 রোগী মরুক বা বাঁচুক, কমবয়সী শিক্ষানবিস ইন্টার্নরা চিকিৎসা দেয়। প্রয়োজনীয় বেড না থাকায় বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হয়। অনেক রোগী দীর্ঘ অপেক্ষা করেও কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে ছুটছেন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে।’

জানা যায়, ৫০০ শয্যার হাসপাতাল পরিচালনার জন্য চিকিৎসকসহ কমপক্ষে ১ হাজার ৬৫০ জনবল প্রয়োজন। কিন্তু হাসপাতালে পূর্বের ২৫০ শয্যার বিপরীতে কর্মরত ছিল ৩৮২ জনবল। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের পরিচালকসহ তিনটি প্রশাসনিক পদ ও ১৬১ জন চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর গত ১৯ মে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদকে পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। একই সঙ্গে জনবল সংকট নিরসনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আলাদাভাবে ১০৭ জনকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন হয়। বৃৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় ৫০০ শয্যা হাসপাতাল অনুমোদনের পর পরিচালকের পদ সৃষ্টি করতেই লেগেছে ১১ বছর। হাসপাতালের জন্য নতুন ১৬১ জন চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি করা হলেও কবে নাগাদ চিকিৎসক পাওয়া যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। এখন শূন্য পদগুলোতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে। তবে জনবল সংকটের দ্রুত নিরসন হবে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, দীর্ঘদিনের জনবল চাহিদা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন হয়েছে। এবার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দ্রুত নিয়োগ দেওয়া হলে হাসপাতালে সেবার মান বাড়বে।

সর্বশেষ খবর