বুধবার, ২২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
ক্ষোভ সংসদীয় কমিটির

ব্যক্তিগত আয়কর ব্যাংকের তহবিল থেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘন করে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত আয়করও ব্যাংকের তহবিল থেকে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। ব্যাকিং খাতের স্বচ্ছতার অভাব এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, রূপালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যাংকের তহবিল থেকে নিজেদের ব্যক্তিগত আয়কর দিয়েছেন। কমিটি আগামী তিন মাসের মধ্যে ব্যাংক তহবিল থেকে আয়কর          বাবদ নেওয়া ২ কোটি ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ৫১ টাকা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ ঘটনাকে ব্যক্তিগত দায় হিসেবে চিহ্নিত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বকেয়া ঋণের ওপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করে ঋণ পুনঃতফসিলকরণের  সুপারিশ করে।

সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে গতকাল সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ডা. মো. রুস্তম আলী ফরাজী।

  কমিটির সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, জহিরুল হক ভূঁঞা মোহন, মনজুর  হোসেন, আহসানুল ইসলাম (টিটু), মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ওয়াসিকা আয়েশা খান, মো. জাহিদুর রহমান বৈঠকে অংশ নেন। সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে রূপালী ব্যাংক লি. ও বেসিক ব্যাংক লি.-এর হিসাব  সম্পর্কিত  মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ২০১৩-১৪ এর অডিট আপত্তিগুলো নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন না নিয়ে আর্থিক ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে মেয়াদি ঋণ বিতরণ, পর্যাপ্ত সহায়ক জামানত গ্রহণ না করে ব্যাংকের যারাই এ ঋণ প্রদানের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দায়ী রাখার বিধান চালুর সুপারিশ করে কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি বকেয়া ঋণের ওপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করে ঋণ পুনঃতফসিলকরণের সুপারিশ করে। অডিট আপত্তিতে কমিটি দেখতে পায় যায়, ২২ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭৯ টাকা ঋণ নিয়ে রপ্তানি করতে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠান (মেসার্স ডিভাইন নিট ওয়্যার লি.)-এর মেয়াদোত্তীর্ণ অনাদায়ী ঋণ আদায় না করে ব্যাংকের কর্মকর্তারা ওই ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির নামে নতুন ঋণ দিয়েছে। কমিটি যারা এমন ঋণ প্রদানের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ দায়েরকৃত মামলা তদারকি করার সুপারিশ করেছে। বৈঠকে সীমাতিরিক্ত চলতি মূলধন সিসি হাইপো ঋণবিতরণ, ডাউন পেমেন্ট ব্যতীত পুনঃতফসিলিকরণ এবং মঞ্জুরিপত্রের শর্তানুয়ায়ী মেয়াদি ঋণ ও ফোর্সড লোন আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংকের ১১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। কমিটি যারা ঋণ প্রদানের সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে দায়ী করার পাশাপাশি বকেয়া ঋণের ওপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ এবং দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে ঋণ পুনঃতফসিলকরণের সুপারিশ করে। বৈঠকে সিএন্ডএজি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, অডিট অফিস এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর