শুক্রবার, ২৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যর্থ সরকারি চার সংস্থা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৯তম সভার সিদ্ধান্ত ছিল ‘৩০ এপ্রিলের মধ্যে  ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনায় থাকা গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। ১৫ মের মধ্যে সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ করা।’ কিন্তু কথা রাখেনি সরকারি চার সংস্থা- কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, চট্টগ্রাম ওয়াসা, পরিবেশ অধিদফতর এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চল। নির্দিষ্ট সময় পার হলেও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন দৃশ্যমান নয় বলে অভিযোগ ওঠেছে। গত ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার আরও সিদ্ধান্ত ছিল, ‘সংস্থাগুলো নিজ নিজ উদ্যোগেই অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে এবং দুর্যোগকালে কোনো প্রাণহানি ঘটলে জেলা প্রশাসক নিজেই বাদি হয়েই সংস্থার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবেন।’ কিন্তু সংস্থাগুলো বলছে, তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অভিযান পরিচালনা করছে। তবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পিডিবি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গেলে বাধার মুখে পড়ে। তাছাড়া উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ, মামলা ও মিছিলও হয়। তদুপরি ঝুঁকিপূর্ণ মতিঝর্ণা পাহাড়ে উচ্ছেদে গেলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা মিলে বাধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। জানা যায়, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মতে জেলা প্রশাসনের ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কিন্তু এর বিপরীতে সংস্থাগুলোর কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। পিডিবি ও পরিবেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করলেও অন্যদের ভূমিকা দৃশ্যমান নয় বলে অভিযোগ আছে। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘সংস্থাগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে সংযোগ  বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। এখন তারাই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।’

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম নগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘আমরা কয়েকটি পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। বাকিটা রমজানের পর পরিচালনা করা হবে।’  

পিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, ‘আকবর শাহ্, মতিঝর্ণাসহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এটি চলমান আছে।’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০০৮ সালে মতিঝর্ণা এলাকাতেই পাহাড় ধসে চার পরিবারের ১২ জন, ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগার পাস বাটালি হিলে পাহাড়ের দেয়াল ধসে ১৭ জন, ২০১৭ সালের ১১ জুন রাতে টানা বর্ষণে ১২ জন এবং ২০১৮ সালে চারজনের মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ খবর