শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে জমজমাট আমের হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ভালো জাতের আম বাজারে আসায় জমতে শুরু করেছে আমের হাট। আমের নামকরা হাট পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজারের সঙ্গে জমে উঠতে শুরু করেছে রাজশাহী নগরীর আমের বাজারগুলোও। বাড়তে শুরু করেছে আড়তদারের সংখ্যা। নগরীর লক্ষ্মীপুর, সাহেববাজার ও রেলগেট এলাকায় ব্যবসায়ীরা বসতে শুরু করেছেন আমের পসরা সাজিয়ে। যদিও পাইকারি বাজারের চেয়ে মণপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব আম।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ১৫ মে রাজশাহীর বাজারে আম উঠতে শুরু করে। সেদিন শুধু গুটি আম বাজারে ওঠে। কিন্তু রাজশাহীতে গুটি আম কম হওয়ায় বাজারে তেমন আসেনি। তবে ২০ মে থেকে ভালো জাতের আম নামানোর নির্দেশনা থাকায় এখন জমে উঠেছে আমের বাজার। বাজারে আসতে শুরু করেছে আম।

তবে বানেশ্বর বাজারের চেয়ে নগরীর আড়তগুলোয় আম বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। ২০ কিলোমিটারের ব্যবধানে বানেশ্বর হাটের চেয়ে রাজশাহী নগরীতে গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা বেশি দামে। এ নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

বুধবার রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বানেশ্বরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি মণ গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। নগরীতে একই আম বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। শুক্রবার নগরীর সাহেববাজারে কয়েকজন আড়তদারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, হাটে যে আম ওঠে তা বিক্রি করেন না নগরীর ব্যবসায়ীরা। শহরের আশপাশে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আনা আমগুলোই নগরীতে বিক্রি হয়। হাটে পাইকারি বিক্রি হওয়ায় দাম কিছুটা কম।

সাহেববাজারের আম ব্যবসায়ী রানা জানান, এখন ধীরে ধীরে বাজারে আম আসতে শুরু করেছে। জমে উঠবে আমের বাজার। গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। হাটের চেয়ে দাম বেশি হওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, ‘হাটে পাইকারি দামে আম কেনাবেচা হয়, আর আমরা খুচরা বিক্রি করি। তাই দাম এত বেশি। তা ছাড়া আমরা বানেশ্বর হাটের আম বিক্রিও করি না। সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম কিনে এনে বিক্রি করি।’

ব্যবসায়ী আকতার জানান, ‘প্রতি মণ গোপালভোগ বিক্রি করছি ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায়।’ হাটের দামের বিষয়ে তিনি জানান, ‘বানেশ্বর বাজারে পাইকারি দামে বিক্রি হয়। আর আমরা খুচরা বিক্রি করি। দাম তো এমন হবেই। আমরা সবচেয়ে ভালো মানের আম বিক্রি করি।’

সাহেববাজারের আরেক ব্যবসায়ী আয়নাল হক জানান, ‘নগরীতে অনেক আড়তদার ব্যবসা শুরু করেছেন। এখন থেকে আমের বাজার জমে উঠবে। বিক্রিও হচ্ছে মোটামুটি। ক্রেতাদের চাহিদামতো আম দিতে পারায় ব্যবসা ভালো হবে আশা করছি।’ দামের বিষয়ে জানান, হাটের চেয়ে নগরীতে দাম তো একটু বেশি হবেই।

নগরীতে আম কিনতে আসা চাকরিজীবী সাজিদ হাসান জানান, ‘ঢাকায় বোন থাকে তাই আম পাঠাতে হবে। বাজারে আমের দাম শুনে ভালো লাগল না। কারণ গতকাল আমার বন্ধুকে ফোন দিলাম, সে বলল বানেশ্বর হাটে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকার আম বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু শহরে তো দাম অনেক বেশি। কয়েক মণ আম কিনতে হবে তাই হাটে গিয়ে আম কিনব।’

প্রশাসনের নির্দেশনামতে ২০ মে গোপালভোগ আম বাজারে আসায় জমতে শুরু করেছে এ আমের হাট। হাটের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, হাটে এখন গোপালভোগ, গুটি, রানীভোগ আম বিক্রি হচ্ছে। গোপালভোগ প্রতি মণ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৮০০, গুটি ও রানীভোগ ৬০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহের মাঝেই পুরো হাট ভরে উঠবে আমে। তিল ধারণের জায়গা পাওয়া যাবে না হাটের মাঠ ও মহাসড়কের পাশের রাস্তাগুলোয়। এদিকে দেশ থেকে বিদেশেও যথেষ্ট সুনাম রয়েছে এ হাটের আমের। হাটের এই সুস্বাদু আম ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশ ও দেশের বাইরে।

সর্বশেষ খবর