রবিবার, ২৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

হালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

জাল নিয়ে প্রস্তুত সংগ্রহকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

শুক্রবার রাতের বজ্রপাতসহ ভারি বর্ষণ। এরপর পাহাড়ি ঢল। এ দুটোই মিলেই রূপালী সম্পদের খনি হিসেবে খ্যাত হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। গতকাল সকালে এক দফায় নমুনা ডিমও ছেড়েছে মা মাছ। এরপর শুরু হয় ডিম সংগ্রহকারীদের পূর্ণমাত্রায় ডিম সংগ্রহের প্রস্তুতি। শত শত ডিম সংগ্রহকারী নৌকা ও জাল নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে হালদা পাড়ে। মা মাছ পূর্ণমাত্রায় ডিম ছাড়ার পর ঐতিহ্যবাহী হালদায় শুরু হবে ডিম সংগ্রহ উৎসব।

হালদা রিচার্স ল্যাবরেটরির মুখ্য সমন্বয়ক প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পর হালদায় এক দফা নমুনা ডিমও ছেড়েছে। আশা করছি রাতে পুরোমাত্রা ডিম ছাড়বে মা মাছ। নমুনা ডিম ছাড়ার পর থেকেই ডিম সংগ্রহকারীরা অপেক্ষা করছে ডিম সংগ্রহের অপেক্ষায়।’ হালদায় প্রায় ৪০ বছর ধরে ডিম সংগ্রহ করছেন হাটহাজারীর গড়দুয়ার এলাকার মোহাম্মদ কামাল সওদাগর। তিনি বলেন, ‘নমুনা ডিম ছাড়ার পর থেকে নৌকা ও জাল নিয়ে অপেক্ষা               করছি  হালদা পাড়ে। আমার মতো সাড়ে তিনশ থেকে চারশ ডিম সংগ্রহকারী অপেক্ষা করছে নদীর পাড়ে।’ তিনি বলেন, ‘ডিম সংগ্রহকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয় হালদার পাড়ে। ডিম সংগ্রহকারী ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে ডিম সংগ্রহের দৃশ্য দেখতে।’ বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতি বছরই চৈত্র থেকে আষাঢ় মাসে কার্প জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে। বজ্রসহ বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢল নেমে হালদায় ডিম পাড়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এরপর নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। নমুনা ডিম ছাড়ার কয়েক ঘন্টা পর পুরোমাত্রা ডিম ছাড়া। হালদা নদীর সত্তার ঘাট, অংকুরী ঘোনা, মদুনাঘাট, গড়দুয়ারা, কান্তার আলী চৌধুরী ঘাট, নাপিতের ঘোনা ও মার্দাশা এলাকায়সহ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়।

 প্রত্যেক বছরই তিন থেকে সাড়ে তিনশ ডিম সংগ্রহকারী ডিম সংগ্রহ করে। এবার ডিম সংগ্রহকারীর সংখ্য বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা।

হালদার গত কয়েক বছরের ডিম সংগ্রহের পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। এরআগে ২০১৭ সালে ১ হাজার ৬৮০  কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ কেজি (নমুনা ডিম) কেজি ওই বছর পুরো মাত্রায় ডিম ছাড়েনি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।

সর্বশেষ খবর