সোমবার, ২৭ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্লেট সংকটে ছাপা বন্ধ সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকা

সমাধানের দাবি আইনজীবীদের

আরাফাত মুন্না

পিএস প্লেট সংকটের কারণে সুপ্রিম কোর্টের মুদ্রিত দৈনিক কার্যতালিকা (মামলার তালিকা সংক্রান্ত বই) ছাপা বন্ধ রয়েছে এক সপ্তাহ ধরে। এর ফলে মামলার শুনানি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন আইনজীবীরা। দ্রুত সংকট সমাধান করে পুনরায় মুদ্রিত কার্যতালিকা সরবরাহের দাবি আইনজীবীদের।

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন বলছে, সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকার আকার বেড়ে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। মুদ্রিত কার্যতালিকা আপাতত সরবরাহ করা না গেলেও অনলাইনে নিয়মিত কার্যতালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। তাই মুদ্রিত কার্যতালিকা সরবরাহের আগ পর্যন্ত অনলাইন কার্যতালিকা ব্যবহারে আইনজীবীদের অনুরোধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার মুদ্রিত কার্যতালিকার চাহিদা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই কার্যতালিকা প্রাপ্তির জন্য আইনজীবীদের বছরে ২ হাজার ৭০০ টাকা গ্রাহক চাঁদা দিতে হয়।

গত ১৯ মে থেকে এই মুদ্রিত কার্যতালিকা ছাপা বন্ধ রয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে নিয়মিতভাবেই দৈনিক কার্যতালিকা আপলোড করা হয়।

জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ও সাধারণ আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দৈনিক কার্যতালিকা প্রকাশ করা সুপ্রিম কোর্টের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও প্রথা। এই কার্যতালিকা যেমন বিচারপতি ও আইনজীবীদের জন্য অপরিহার্য, তেমনি বিচারপ্রার্থী মানুষের জন্য এটা অতি প্রয়োজনীয়।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মুদ্রিত কার্যতালিকা প্রকাশ বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন সাধারণ আইনজীবী পরিষদের আন্দোলনের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি। আমার মনে হয়, নতুন করে আবার মুদ্রিত কার্যতালিকা প্রকাশ বন্ধের একটা পাঁয়তারা চলছে। এবারও আমরা সোচ্চার আছি। অবকাশের পর সুপ্রিম কোর্ট খোলার দিন থেকেই মুদ্রিত কার্যতালিকা প্রকাশ করে সরবরাহ না করা হলে কঠিন আন্দোলনে যাবেন বলেও হুমকি দেন এই আইনজীবী নেতা।

তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন অনলাইনে কার্যতালিকা আপলোড করলেও, অনেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইন্টারনেট ব্যবহারে পারদর্শী নন। তাই তারা অনলাইন কার্যতালিকা ব্যবহারও করতে পারেন না। তা ছাড়া কখনো ওয়াইফাই সমস্যা, আবার কখনো মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা রয়েছে। সব মিলিয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ অনলাইন কার্যতালিকায় যাওয়ার সময় হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের দৈনিক কার্যতালিকা ১০০ ফর্মা হলেও বর্তমানে তা গড়ে ১৩০ ফর্মা। দৈনিক কার্যতালিকার ফর্মা সংখ্যা বাড়ায় পিএস প্লেটের সংকট দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত পিএস প্লেট ক্রয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও প্লেটের ভ্যাট ১ শতাংশ থেকে ২৯ শতাংশে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানিকারকরা সেটি সরবরাহ করতে পারছে না। পিএস প্লেট পাওয়া না পর্যন্ত কার্যতালিকা মুদ্রণ করা সম্ভব হবে না মর্মে গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস থেকে জানানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পিএস প্লেট সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রিন্টিং প্রেস সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের দৈনিক কার্যতালিকা মুদ্রণ করতে পারছে না। এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অনলাইন কার্যতালিকা ব্যবহার তথা অনুসরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর