রবিবার, ২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিদ্যুতে আশার আলো দামকুড়ার সোলার

চার্জ করা যায় লোডশেডিয়েও

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর দামকুড়া এলাকায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির গড়ে তোলা সোলার প্রকল্প থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ ব্যবহার করে অটোরিকশায় চার্জ দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুতের চার্জের তুলনায় এখানে খরচ কম হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের ঘটতি পূরণ করছে এ প্রকল্পটি। মডেল হিসেবে চালু হওয়া দামকুড়ার এই প্রকল্পটি সাধারণ মানুষের মনে আশা আলো জাগাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই পদ্ধতি যেমন সাশ্রয়ী, তেমন পরিবেশবান্ধব। এ পদ্ধতিতে প্রথমে সোলার থেকে ব্যাটারিতে চার্জ করা হয়। পরে ব্যাটারি থেকে অটোরিকশায় চার্জ করা হয়। ফলে লোডশেডিংয়ের সময়েও এর মাধ্যমে চার্জ করা যায়। এতে গ্রাহকের বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ থেকে বাঁচে পরিবেশ।

পবা উপজেলার দামকুড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের বাড়ির ছাদে বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল। এই সোলার থেকে প্রথমে ব্যাটারিতে চার্জ করছেন। পরে ব্যাটারি থেকে গ্রাহকদের অটোরিকশায় চার্জ দিচ্ছেন। এই প্রকল্পের যান্ত্রিক সব সহায়তা দিয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। সোলার প্যানেল বসানো থেকে শুরু করে ব্যাটারিসহ অন্যান্য সব যন্ত্র বসানো হয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। ভবনের মালিক শফিকুল ইসলাম বাড়ির সামনে একটি গ্যারেজ বানিয়েছেন। এখানে অটোরিকশা চার্জ দেওয়া হয়। এখান থেকে হওয়া আয় পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ও শফিকুল ইসলামের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ভাগাভাগি হয়। শফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ৫-৬টা অটোরিকশাতে চার্জ করা হচ্ছে। আর প্রতি অটোরিকশা চার্জ বিল নিচ্ছেন ১২০ টাকা। বাইরে বিদ্যুতে চার্জ করতে খরচ হয় ১৫০ টাকা। সে হিসেবে সোলারের মাধ্যমে চার্জ করলে ৩০ টাকা কম খরচেই চার্জ করতে পারছেন গ্রাহকরা। এতে গত দুই মাসে তার আয় হয়েছে ১৯ হাজার টাকা। রাজশাহী পল্লীবিদ্যুতের জিএম মোজাম্মেল হক বলেন, এ প্রল্পের উৎপাদন ক্ষমতা ২১ কিলোওয়াট। এখানে ৩২০ ওয়াট পিক ক্ষমতাসম্পন্ন ৬৬টি প্যানেল বসানো হয়েছে। গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ থেকে ৮০ কিলোওয়াট। ঝড়বৃষ্টির কারণে কখনো সোলারে কাজে ব্যাঘাত ঘটালে পল্লীবিদ্যুতের নিজস্ব বিদ্যুতের মাধ্যমে অটোরিকশা চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তিনি বলেন, সোলার সিস্টেম পদ্ধতি পরিবেশের জন্য অনেক ভালো। এর ফলে পরিবেশ দূষিত হয় না। যদি প্রতিদিন ১০-১২টি অটোরিকশায় চার্জ দেওয়া যায়, তাহলে এই পদ্ধতিতে আরও লাভ করা সম্ভব হবে। রাজশাহী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জীবাশ্ম জ্বালানি গ্যাস, তেল, কয়লা অতিদ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। সরকার বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জ্বালানি বহুমুখীকরণের আওতায় প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় সোলার সিস্টেম প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নিয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি।

সর্বশেষ খবর