শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
ধর্ষণ শেষে হত্যা

গুম লাশের স্পট দেখাল খুনি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

শারীরিক সম্পর্ক শেষে এক নারীকে কীভাবে কোথায় লাশ গুম করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল ফেসবুক লাইভে খুনিকে সঙ্গে নিয়ে স্পট চিহ্নিত করল র‌্যাব-১১। ওই সময় খুনি ধর্ষক লাইভে অকপটে দৃঢ়তার সঙ্গে বলে যাচ্ছিলেন নিজের অপকর্মের কথা। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর কাঁচপুরের মঞ্জিলখোলা এলাকায় ধর্ষণের পর হত্যার শিকার মিনু আক্তার (৩০) নামে ওই নারীর মাটিচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। ঘটনার ১৬ দিন পর  হত্যাকারী জুনায়েদ (৪৮) আহমেদকে আটকের পর শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাটি খুঁড়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় একটি অনলাইন পোর্টালের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় খুনি জুনায়েদ কীভাবে মিনুকে হত্যার পর কোথায় লাশ গুম করেছে সেই স্পট দেখিয়ে দিচ্ছে।  জানা গেছে, হত্যার শিকার মিনু সোনারগাঁ মঞ্জিলখোলা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম মদিনার মেয়ে। সে একজন স্বামী পরিত্যক্ত নারী। ঘাতক জুনায়েদ বি.বাড়িয়া জেলার হরিপুর গ্রামে মৃত সৈয়দ রফিক উদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রীর নাম রোকেয়া। জুনায়েদের স্ত্রী একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। স্ত্রী চাকরিতে গেলে প্রায় সময় মিনুকে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে লম্পট জুনায়েদ। গত ২১ মে কোনো একটি বিষয় নিয়ে মিনু ও জুনায়েদের মধ্যে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে মিনুকে হত্যা করে জুনায়েদ। পরে মিনুর লাশ প্রথমে বিবস্ত্র অবস্থায় মঞ্জিলখোলা এলাকার একটি মাছের খামারে কস্তুরির নিচে লুকিয়ে রাখে। একদিন পর ফের ২২ মে জুনায়েদ মিনুর লাশ কস্তুরি থেকে বের করে পুকুরের পাশেই মাটিচাপা দেয়। এদিকে মেয়ে মিনু নিখোঁজের ঘটনায় মা মদিনা সোনারগাঁ থানায় গত ২৩ মে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন (জিডি নং-৯২৪)। থানা পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় মা মদিনা র‌্যাব-১১ এর দ্বারস্থ হন। র‌্যাব-১১ পরবর্তীতে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে মিনুর সঙ্গে জুনায়েদের যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে জুনায়েদকে আটকের পর সে সব স্বীকার করে। ৭ জুন সকালে জুনায়েদ মিনুর লাশ কোথায় কীভাবে হত্যা শেষে গুম করেছে তা র‌্যাবকে জানিয়ে স্পটে দেখিয়ে দেয় এই খুনি। এদিকে মিনুর পরিবারের দাবি, মিনুকে জুনায়েদ বিয়ে করেছিল। কিন্তু তারা কাবিনানামার কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। এ বিষয়ে র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি আলেপ উদ্দিন জানান, গত ২১ মে মিনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে মরদেহ গুম করে জুনায়েদ। বিষয়টি র‌্যাবকে জানানো হলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘাতক জুনায়েদকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ দিন পর তাকে সঙ্গে নিয়ে মাটি খুঁড়ে মিনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, পুরো ঘটনাটি আরও তদন্ত চলছে। 

সর্বশেষ খবর