রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সিলেট জেলা বিএনপির কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সিলেট জেলা বিএনপির কমিটি। দল পুনর্গঠন করতে শিগগিরই কেন্দ্র থেকে গঠন করে দেওয়া হচ্ছে আহ্বায়ক কমিটি। তিন  মাসের মধ্যে এই আহ্বায়ক কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা কমিটি পর্যন্ত গঠন করবেন। দলীয় সূত্র জানায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সিলেট জেলা বিএনপি পুনর্গঠনে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত ২৬ এপ্রিল মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে সিলেট জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি। এর আগেই দলকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেওয়া হয় পুনর্গঠনের। সে লক্ষ্যে গত ৮ এপ্রিল জেলা বিএনপির শীর্ষ ৯ নেতাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে দলের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা জানতে চান তারেক রহমান। নির্দেশ দেন দল পুনর্গঠনের। সিলেটে দলকে কীভাবে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করা যায় এ ব্যাপারে ১৫ মের মধ্যে কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারেক রহমানের নির্দেশে জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ তাদের দলীয় পরিকল্পনা ঠিক করে ১৫ মে আবারও ঢাকায় গিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন তার সঙ্গে। ওই  বৈঠকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ঈদের আগেই বর্তমান কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তের কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঈদের আগে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়নি। সূত্র জানায়, এবার ছোট পরিসরেই আসছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। ৭ থেকে ১১ সদস্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে কমিটি। একই দিনে বর্তমান কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হবে। আহ্বায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নূরুল হক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি কাহির চৌধুরীর নাম। তবে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জৈন্তাপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করায় শেষ পর্যন্ত অ্যাডভোকেট নূরুল হক পুনরায় আহ্বায়ক হওয়ার সম্ভাবনা কমই দেখছেন নেতা-কর্মীরা। এ বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কাহির চৌধুরীই। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি এম এ হকের নামও আহ্বায়ক হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, নতুন কমিটির আহ্বায়ক যিনি হবেন তিনি পরবর্তী সম্মেলনে প্রার্থী হতে পারবেন নাÑ এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাই সম্মেলনের মাধ্যমে যারা নেতৃত্বে আসতে চান তারা আহ্বায়ক হতে অনাগ্রহী। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ তিন মাস হলেও তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে গুরুদায়িত্ব। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলার নতুন কমিটি গঠন করে জেলার সম্মেলনের আয়োজন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে এতগুলো কমিটি গঠন অনেকটা দুঃসাধ্য ব্যাপার বলেও মনে করছেন অনেকে। এদিকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক পন্থায় নেতৃত্ব নির্বাচনের এই উদ্যোগ তখন দল ও দলের বাইরে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। বিএনপিতে দাবি উঠেছিল সিলেটের মতো সব জেলা ও উপজেলায় একই পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের। ওই কাউন্সিলে উপজেলা ও পৌরসভা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ভোটার হয়েছিলেন। কিন্তু এবার কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সিলেট জেলার আওতাধীন ১৩টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভার কমিটির সবাই হবেন ভোটার। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটেই নির্বাচিত হবে নতুন নেতৃত্ব। এ ছাড়া গত বছর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ১৫১ সদস্যের স্থলে ২৮৫ জনের কমিটি গঠন করা হলেও এবার এতে কড়াকড়ি আরোপ করেছেন তারেক রহমান। গঠনতন্ত্র কোনোভাবেই লঙ্ঘন করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সিলেটের নেতাদের। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খুব শিগগিরই জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা রয়েছে। কাজের সুবিধার্থে এবার ছোট পরিসরে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। দলকে পুনর্গঠনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে নেতা-কর্মীদের মধ্যেও চাঙাভাব এসেছে। এর মাধ্যমে সিলেটে দল আরও শক্তিশালী হবে বলে আমরা আশাবাদী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর