রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঈদের ছুটিতে বন্দরে কনটেইনার জট

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ঈদের ছুটিতে পণ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের আগে ও পরে তিন দিন সড়কে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় এই জটের সৃষ্টি হয়। ঈদের দিন বুধবার ১২ ঘণ্টার জন্য বন্দরে পণ্য ডেলিভারি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এর পর থেকে পণ্য ডেলিভারি দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। কিন্তু পণ্য ডেলিভারির ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, ট্রান্সপোর্টসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো শতভাগ সক্রিয় না থাকায় পণ্য ডেলিভারি সম্ভব হয়নি। এ অবস্থা চলতে থাকলে কনটেইনার জট মারাত্মক রূপ নেবে বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তবে গতকাল থেকে বন্দরের ইয়ার্ড থেকে কনটেইনার ও কার্গো মালামাল খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই দিন সাড়ে তিনশ টিইইউস কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে এর পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানান বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক। চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম জানান, শুধু ঈদের দিন কিছু সময়ের জন্য বন্দরের পণ্য ওঠানামা কিংবা খালাস বন্ধ ছিল। এরপর পণ্য খালাস করতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ঈদে বন্দর সচল থাকলেও তার সংশ্লিষ্ট দফতর কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলো সচল না থাকলে এর সুফল পাওয়া যায় না। রাস্তায় পণ্যবাহী যান না চললে আমদানিকারকরা পণ্য কীভাবে গন্তব্যে নিয়ে যাবেন? সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা সচল না হলেও পণ্য ডেলিভারি সম্ভব হয় না। এ ছাড়া রপ্তানিপণ্য জাহাজীকরণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আইসিডিগুলোতে (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) অপেক্ষমাণ কনটেইনারগুলোও বন্দরে নিয়ে যেতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। ফলে কিছু কনটেইনার ইয়ার্ডে জমা হয়েছিল ঠিকই, তবে একে কনটেইনার জট বলা যাবে না। সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ও বিজিএপিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি খন্দকার লতিফুর রহমান আজিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বন্দরে আমাদের কনটেইনার ভর্তি পণ্য রয়েছে। কিন্তু সড়কে পণ্যবাহী যান চলাচল না করায় ইচ্ছে থাকলেও সিঅ্যান্ডএফ-সংশ্লিষ্ট কাজগুলো করা হয়নি। বন্ধের দিনগুলোতে পণ্যও ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব হয়নি।’ এদিকে আমদানিকারকরা জানান, ঈদে কনটেইনার জট সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি প্রতিবছরের নিয়মে পরিণত হয়েছে। বন্দর সচল থাকলেও কাস্টমস, শিপিং এজেন্ট, ব্যাংক, পণ্য পরিবহনসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস নিরবচ্ছিন্ন রাখতে কর্তৃপক্ষকে আরও গুরুত্ব আরোপ করে পরিকল্পনা নিতে হবে। অন্যথায় ঈদের ছুটির ফলে টানা সাত-আট দিন পণ্য খালাসে ধীরগতির জের টানতে হতে পারে অনেক দিন ধরে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সব ইয়ার্ডে ৪৯ হাজার টিইইউস কনটেইনার রাখা সম্ভব। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে দুই থেকে আড়াই হাজার টিইইউস কনটেইনার ডেলিভারি হয়। ঈদের আগে থেকে কনটেইনার ভেলিভারির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় দুই থেকে তিনশ টিইইউসে। তবে বন্দর ইয়ার্ডে এখনো কনটেইনার রাখার মতো খালি জায়গা রয়েছে বলে জানান সচিব ওমর ফারুক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর