সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে পদ্মার পাড় দখলের হিড়িক

এক মাসে গড়ে উঠেছে শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পারিবারিক স্থাপনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

মাত্র এক মাস আগেই হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান। কিন্তু ঠিক পুরনো চেহারায় আবারও রাজশাহীর পদ্মার পাড়। পদ্মা নদীর পাড় দখল করে গড়ে উঠছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সিটি করপোরেশনের তৈরি করা বিনোদন কেন্দ্রের পাশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ার হিড়িক পড়েছে। চলছে দখল আর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার হিড়িক। গত এক মাসে পদ্মার পাড়ে এ রকম শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পারিবারিক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নদী দখলের প্রবণতা বাড়ছেই।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন প্রথম মেয়াদে মেয়র থাকার সময় নগরীর বড়কুঠি এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর কাছের পরিত্যক্ত জায়গায় দৃষ্টিনন্দন বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলেন। প্রতিদিন সেখানে মানুষের ঢল নামে। এই বিনোদন কেন্দ্রের নাম দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে রাজশাহীতে অবস্থানকারী নরওয়ের সাংবাদিক অডভার মুনসগাডের নামে ‘অডভার মুনসগাড পার্ক।’ এ পার্কের পূর্ব পাশে একটি ফুডকোট এবং পশ্চিম দিকে ‘এম্ফি থিয়েটার’ করা হয়েছে। ফুডকোটের পাশে বেসরকারি উদ্যোগে আরও ছয়টি ফুডকোট গড়ে উঠেছে। নদীর পাশে যাদের জমি আছে, তারা নিজেদের জায়গায় একটি দোকান তৈরি করেছেন। পরে তারা নদীর পাড় বেঁধে তাদের প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারিত করেছেন। এন ফুড কর্নারের কর্মচারী মাসুদ রানা বলেন, পেছনে মালিকের বাড়ি। যার যার বাড়ির সামনের সরকারি জায়গার ওপর তারই অধিকার থাকে। সেই হিসেবে মালিক জায়গাটি বেঁধে বসার উপযোগী করেছেন। কিন্তু মাঝখানে সিটি করপোরেশনের রাস্তা ঠিকই আছে। ফ্রেন্ডস ফাস্ট ফুডের স্বত্বাধিকারী আবদুস সালামের দাবি, এ জায়গায় তাদের ১০ বছরের পরিশ্রম আছে। এরপর জায়গাটি বসার মতো হয়েছে। এখন নদীর ঢেউ এসে প্রথমে তাদের বাঁধা জায়গায় লাগবে। তার নিচে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধানো স্লোপিং। তারাই জায়গাটি সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। একইভাবে নগরীর মুন্নুজান স্কুলের বিপরীতে রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চের পাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, জাহাজঘাট, পঞ্চবটি, খোজাপুর ও বাড়ির মালিকরা তাদের বাড়ির পাশে নদীর পাড়ে পাকা স্থাপনা তৈরি করেছেন। বিজিবি নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় নদীর জায়গা ইজারা নিয়ে স্থাপনা তৈরি করেছে। রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষও কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এর প্রতিবাদে রাজশাহীতে আন্দোলন হচ্ছে। রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সাহিনুর আলম বলেন, নদীর মালিক তারা নন। মালিক হচ্ছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তাদের নিয়ম অনুযায়ী নদীর ‘ফোর শোর লাইন’ থেকে ১৫০ মিটার পর্যন্ত নদীর এলাকা থাকে। তবে রাজশাহীতে শুধু টি-বাঁধের জায়গাটি পাউবোর অধিগ্রহণ করা। এর আশপাশে যারা দখল করেছেন, তাদের উচ্ছেদ করা হবে।

সর্বশেষ খবর