সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

কৃষিশুমারি শুরু, চলবে ২০ জুন পর্যন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষিশুমারির জন্য মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের কাজ গতকাল শুরু হয়েছে। শুমারির মাধ্যমে শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের পর্যায়ক্রমিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। চলবে ২০ জুন পর্যন্ত। দেশের প্রথম নাগরিক রাষ্ট্রপতি এবং প্রথম খানা (পরিবার) রাষ্ট্রপতির বাসভবনে গিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় পরিকল্পনামন্ত্রী এই গণনার কাজ শুরু করেন। এর আগে গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে কবুতর ছেড়ে ও বেলুন উড়িয়ে শুমারির উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। এরপর র‌্যালি ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মানুষের যেমন স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন, তেমনি অর্থনীতির অবস্থা জানতে কৃষিশুমারিসহ অন্যান্য শুমারি পরিচালনা করা হয়। এই শুমারির মাধ্যমে শুধু ধান ও পাটই নয়, হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল সব কিছুরই তথ্য পাওয়া যাবে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই প্রাথমিক ফলাফল এবং ৬ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে। বিবিএস কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ছয়টি প্রধান ফসল (আউশ, আমন, বোরো, গম, আলু ও পাট) এবং ১২০টি অপ্রধান ফসলের হিসাব প্রস্তুত করছে। অতীতে কৃষিশুমারিতে শুধু অস্থায়ী ফসলের হিসাব  নেওয়া হতো। এবার শুমারিতে অস্থায়ী ফসলের পাশাপাশি স্থায়ী ফসলের যেমন, বনজ ও ফলদ বৃক্ষ ও এর উৎপাদন সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

শুমারিটি পরিচালনার মাধ্যমে ভূমির ব্যবহার, চাষযোগ্য জমির প্রকার ও ফসলের বৈচিত্র্য, কৃষি উপকরণ, সেচ যন্ত্রপাতি সম্পর্কিত পরিসংখ্যান, কৃষিবিষয়ক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে উপাত্ত সরবরাহ, কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া, জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান নির্ণয় এবং কৃষি খানা ও প্রতিষ্ঠানের রেজিস্টার তৈরি করা হবে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩৪৫ কোটি টাকা। ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো নমুনা আকারে কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর, ১৯৯৬ সালে এবং ২০০৮ সালে কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়।

 সেই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর (২০১৯ সালে) অনুষ্ঠিত হচ্ছে কৃষিশুমারি। এতে পল্লী এলাকায় গড়ে ২৪০টি খানা (পরিবার), পৌরসভা এলাকায় গড়ে ৩০০টি এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় গড়ে সাড়ে ৩০০ খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি গণনা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয় গণনাকারী নিয়োগ করা হয়েছে। সারা দেশে ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন গণনাকারী কাজ করছে। তাদের কাজ পরিদর্শনের জন্য স্থানীয়ভাবে ২৩ হাজার ১৬৫ জন সুপারভাইজার কাজ করছে। এছাড়া শুমারি কাজের সুবিধার্থে ৬৪টি  জেলাকে ৯০টি শুমারি এলাকায় ভাগ করে বিবিএস-এর ৯০ জন কর্মকর্তাকে জেলা শুমারি সমন্বয়কারী এবং ৮টি বিভাগকে ১০টি শুমারি বিভাগে ভাগ করে বিবিএসের ১০ জন কর্মকর্তাকে বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী একজন এবং প্রধান শুমারি সমন্বয়কারী হিসেবে একজন দায়িত্ব পালন করছেন।

সর্বশেষ খবর