মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে শুরু হচ্ছে সমন্বিত উচ্ছেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সব সংস্থার সমন্বয়ে শুরু হচ্ছে সমন্বিত উচ্ছেদ অভিযান। জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের আওতায় এ অভিযান পরিচালিত হবে। অভিযানের প্রস্তুতি নিয়ে আগামী ১৮ জুন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে প্রস্তুতি বৈঠক। বৈঠকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড, সিডিএ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ (চসিক) সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। মেগা প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, উচ্ছেদের লক্ষ্যে বিএস জরিপ অনুযায়ী খালের নকশা প্রণয়ন করছে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। নকশা অনুযায়ী অবৈধ ও উচ্ছেদযোগ্য স্থাপনার তালিকা করবে সিডিএ। এরপর সিডিএ, চসিক ও সেনাবাহিনী মিলে যৌথভাবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে। প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, ‘দাফতরিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এখন সব সংস্থার সমন্বয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ জুন সিডিএ’র সম্মেলন কক্ষে সমন্বিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিএস জরিপ অনুযায়ী খালের আদি নকশা সংগ্রহ এবং কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান নকশা প্রণয়ন চলছে। এরপর সিডিএ ডিমার্কেশন করবে। তবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রমে চসিককে যুক্ত করা হচ্ছে। কারণ নকশা প্রণয়নের পর চিহ্নিত জায়গাগুলো উচ্ছেদে সিডিএ-চসিককে প্রয়োজন। এখানে কোথাও চসিকের সম্পৃক্ততা, কোথাও সিডিএর সম্পৃক্ততা। তাই তিন সংস্থা মিলেই কাজ করা হচ্ছে।’

সিডিএ’র প্রকৌশলী আহমেদ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘চসিক, বন্দর, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পুলিশ, রেলওয়ে, সওজসহ সংশ্লিষ্ট প্রায় ১৫টি সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হবে।’

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে একনেকে পাস হয়। সিডিএ’র তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন।

২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে খালের আবর্জনা অপসারণের মধ্য দিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে মেগা প্রকল্পের আওতায় নগরীর একে খান এলাকায় খালের ওপর একটি পাওয়ার স্টেশনের বর্ধিত অংশ ভাঙা এবং পাঠানটুলি এলাকায় একটি খালের ওপর কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালের ওপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং খালগুলো খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিন ধাপে খালগুলো খনন ও সংস্কার করা হবে। প্রথম দফায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৩টি খালের খননকাজ চলছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০টি এবং শেষ পর্যায়ে বাকি খালগুলো থেকে মাটি উত্তোলন করা হবে। খাল খনন ও সংস্কারের পর প্রতিরোধ দেওয়াল তৈরি করে খালের পাড়ে ১০ ফুট করে রাস্তা করা হবে।

জানা যায়, জোয়ারের সময় নগরীর বিভিন্ন খালে প্রবেশ করা অতিরিক্ত পানি অপসারণে প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন খালের প্রবেশমুখে ৪০টি রেগুলেটর স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে সেনাবাহিনী পাঁচটি, সিডিএ ১২টি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৩টি রেগুলেটর স্থাপন করবে। রেগুলেটর স্থাপনের কাজ আগামী শুকনো মৌসুমে শুরু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর