শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

দেড় মাস পর বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠক

এজেন্ডায় চার এমপির শপথ ও ছাত্রদল ইস্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেড় মাস পর আজ বিকালে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিকাল সাড়ে পাঁচটায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ তথ্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।

জানা গেছে, এই বৈঠকে দেশের চলমান রাজনীতি, দলের আন্দোলন কর্মসূচি, দল পুনর্গঠন, জোট সম্প্রসারণ ও ছাত্রদলে সংকট সমাধান কী হতে পারে এসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এ ছাড়া বৈঠকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের চার এমপির শপথ নেওয়ার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রায় প্রতি সপ্তাহের শনিবার স্থায়ী কমিটির  বৈঠক বসত। কিন্তু দলের নির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে প্রায় দেড় মাস কোনো বৈঠকই হয়নি।  জানা যায়, গত দেড় মাসে বৈঠক না বসার পেছনে ভিন্ন কারণ ছিল। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসেছিল। ওই বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের সব সিদ্ধান্ত  নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী কমিটির নেতাদের কাছ থেকে একক ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছিলেন। তখন তাকে স্থায়ী কমিটির  নেতারা বলেছিলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের  চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত  চেয়ারম্যানই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সেক্ষেত্রে এই ক্ষমতা চাওয়ায় স্থায়ী কমিটির নেতারা বিব্রত বোধ করেছিলেন। বৈঠকের পরের দিন ২৯ এপ্রিল তারেক রহমান দলের নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া অন্যরা শপথ  নেন।

সূত্র জানায়, শপথ নেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থায়ী কমিটির  নেতারা ক্ষুব্ধ হন। এর কয়েক দিন পর স্থায়ী কমিটির  বৈঠক ডেকেও পরে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় বিএনপি। জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা ওই  বৈঠকে বসতে অস্বীকৃতি জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই বৈঠক বাতিল করা হয়েছিল। পরে নয়াপল্টনে স্কাইপের মাধ্যমে কথা বলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের  নেতাদের ক্ষোভ প্রশমনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে বৈঠকও করেন গয়েশ্বর।

স্থায়ী কমিটিকে নিজেদের অবস্থান জানাল ছাত্রদল : বয়সসীমা না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদলের নেতারা গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় তাদের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন সদ্য সাবেক ছাত্রদল নেতারা। গুলশানে বিএনপি  চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকালে প্রথমে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ড. আবদুল মঈন খানের সঙ্গে দেখা করেন তারা। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে দাবির বিষয়ে অবহিত করেন ক্ষুব্ধ নেতারা। একই সঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতির বিষয়টিও তুলে ধরেন ছাত্রদল নেতারা। এ ছাড়া সার্চ কমিটিতে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীও গতকাল রাতে ছাত্রদল নেতাদের আবারও ফোন করে ইতিবাচক সমাধানের আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা এজমল হোসেন পাইলট বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা তাদের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছেন। শনিবারের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আমাদের কোনো কর্মসূচি পালন না করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি আমরা প্রত্যাহার করেছি।

সর্বশেষ খবর