শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

যমুনার চরে গড়ে উঠতে পারে অর্থনৈতিক অঞ্চল

খুলে যাচ্ছে সম্ভাবনার দুয়ার

মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চরে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভূঞাপুর উপজেলায় ৫০২.০২ একর খাসজমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য জোর তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু টাঙ্গাইল নয়, আশপাশের এলাকার শিল্প-বাণিজ্যের সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে। কর্মসংস্থান হবে হাজার হাজার মানুষের।

দেশে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার পলশিয়া মৌজায় ৯৬.৩৪ একর, দোভায়া মৌজায় ৪৫.৪৫ একর, কোনাবাড়ী মৌজায় ৯৭.১৩ একর, পাটিতাপাড়া মৌজায় ৩২.৪০ একর, নাগরগাতী মৌজায় ৮৭.৩৮ একর, ভালকুটিয়া মৌজায় ৯৬.৩৬ একর, কষ্টাপাড়া মৌজায় ৬.৯৬ একর এবং খানুরবাড়ী মৌজায় ৪০ একরসহ সর্বমোট ৫০২.০২ একর ভূমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্থানটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি যমুনার তীরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এ ছাড়া এটি রেলস্টেশনের নিকটবর্তী হওয়ায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থারও প্রসার ঘটবে। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হওয়ায় সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ হবে। এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে সর্বোপরি  টাঙ্গাইলসহ পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে। এরই মধ্যে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, মো. ছানোয়ার হোসেন এমপি ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম।

এর আগে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল মহাব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান ভূঞাপূরে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘যমুনায় জেগে ওঠা চর ও আশপাশের অব্যবহৃত পড়ে থাকা খাসজমি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বাছাই করা হয়েছে। সরকার চায় অব্যবহৃত পড়ে থাকা ও অকৃষি জমি ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে। অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে যা যা করা দরকার তা তিনি করবেন বলে জানান।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য দেশে এক টুকরো জমিও পড়ে থাকবে না। সেই লক্ষ্যকে কাজে লাগিয়ে যমুনার চরে জেগে ওঠা খাসজমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলায় এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠলে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবে। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের।

টাঙ্গাইল-২ (ভুঞাপুর-গোপালপুর) আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, উন্নত দেশের কাতারে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে সম্ভবনাময় ভূঞাপুরে যমুনার চর এলাকায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল। এই অর্থনৈতিক অঞ্চল আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যাপক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। এতে টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বেকার জনগোষ্ঠীর ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ভূঞাপুর উপজেলায় ৫০২.০২ একর খাসজমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এর পাশে আরও এক হাজার একর খাসজমি রয়েছে। জমির প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তা দেওয়া যাবে বলে তিনি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর