শিরোনাম
শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অহন আর বেকার নাই কাজ পাইয়া সুখে আছি

পায়রা বন্দরের দিনকাল

রাহাত খান, বরিশাল

অহন আর বেকার নাই কাজ পাইয়া সুখে আছি

পায়রা বন্দরের কর্মযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে অনেকের মতো বেকার ছিলেন তালতলী উপজেলার বৃদ্ধ আইজুদ্দিন। কিন্তু বন্দরের কাজ শুরু হওয়ার পর তিনি বললেন, ‘অহন আর বেকার নাই। আগে তালতলীতে কাজকর্ম আছিল না। অহন কাজ পাইয়া ভালোই চলছে। কর্ম পাইয়া সুখে আছি।’  কলাপাড়ার লালুয়া এলাকার বৃদ্ধ বাহাদুর মাঝি বলেন, ‘পায়রা বন্দর হইয়া আমাগো কাজকর্ম বাড়ছে, এইডাই আমাগো লাভ।’ পায়রা বন্দরের আবাসন প্রকল্পের পাশের ছোট মুদি দোকানি স্বপন গাজী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার কলাপাড়ায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হাতে নিয়েছে। বাইরে থেকে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কলাপাড়ায় এসেছেন। তাদের আনাগোনায় এই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি পেয়েছে। দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে এই এলাকার চিত্র।’ পায়রা আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নিয়োজিত কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান বলেন, ‘পায়রা বন্দরের আবাসন প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ সচ্ছলভাবে জীবনযাপন করছে।’

কয়েক মাস আগেও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের লামুপাড়ার যুবক মো. সবুজ। কিন্তু পরিবারের প্রয়োজনীয় জোগান দিতে পারতেন না। অভাব-অনটন লেগেই থাকত। মাস তিনেক আগে পেশা পরিবর্তন করে পায়রা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৩ হাজার পরিবারের জন্য নির্মাণাধীন ৬টি টাউনশিপ (আবাসন) নির্মাণ প্রকল্পের কাজে যোগ দেন তিনি। এর আগে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া রাজমিস্ত্রির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। তার মতো এখন তরুণ-যুবকসহ বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষের অস্থায়ী কর্মসংস্থান হয়েছে পায়রা সমুদ্র বন্দরের নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পায়রা বন্দরের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার একর জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৩ হাজার পরিবারের জন্য ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে স্থায়ী পাকা বসতি (৬টি পৃথক টাউনশিপ) নির্মাণ করে দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের ১৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এই টাউনশিপ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার জন্য দিন-রাত কাজ করছেন হাজারো শ্রমিক-কর্মচারী।

পায়রা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এক পুনর্বাসন প্রকল্প ঘিরেই ওই এলাকায় বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। হাজারো মানুষের আনাগোনার কারণে ওই এলাকায় দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষকে কারও চাকরি দিতে হচ্ছে না, তাদের ব্যবসা-কর্মসংস্থান তারাই খুঁজে নিচ্ছেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর