শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

২৪ বছর ধরে রেজিস্ট্রার পদে ভারপ্রাপ্তরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় -১

বাইজিদ ইমন, চবি

১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে রেজিস্ট্রার পদে ১৫ জন দায়িত্ব পালন করলেও ১২ জনই ছিলেন ভারপ্রাপ্ত। দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ না দেওয়ায় প্রশাসনে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়ম চলে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একাধিকবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ২৪ বছর ধরে কাউকে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়নি এ প্রশাসনিক পদটিতে।

প্রশাসনের সিদ্ধান্তহীনতা, রাজনৈতিক প্রভাব, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতেই গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে নিয়মিত নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। সর্বশেষ নিয়মিত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আবদুর রশিদ। ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি অবসরে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে কাজ পরিচালনা। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ৯ জন ভারপ্রাপ্ত কাজ করেছেন। তারা হলেনÑ প্রফেসর ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার (১৯৯৫-১৯৯৯), প্রফেসর এম জহুরুল আলম চৌধুরী (১৯৯৯-২০০২), আহমেদুল হক চৌধুরী (২০০২-২০০৩), এম ইদ্রিস মিয়ান (২০০৩-২০০৬), মো. জহুরুল ইসলাম (২০০৬-২০০৯), প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহ আলম (২০০৯-২০১১), প্রফেসর ড. শফিউল আলম (২০১১-২০১৪), প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী (২০১৪-২০১৫), প্রফেসর ড. কামরুল হুদা (২০১৫-২০১৮)।

অতীতে অধিকাংশ রেজিস্ট্রারই ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তারা এটি পালন করেছেন। কিন্তু এবারে কে এম নূর আহমদ নামের একজন কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমান রেজিস্ট্রার এ কে এম নূর আহমদ রেজিস্ট্রার অফিসের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তাকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার আমার মূল দায়িত্ব নয়। এটি আমার অতিরিক্ত দায়িত্ব। প্রশাসনিক কাজে গতিশীলতা, স্বচ্ছতা কিংবা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারদের প্রায় সবার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যেকেই বিভিন্ন পদে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও অর্থের বিনিময়ে লোক নিয়োগ দিয়েছেন। এ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারদের ১০০ জনেরও বেশি আত্মীয়কে প্রশাসনের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. কামরুল হুদার বিরুদ্ধেও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় তিনি রেজিস্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন, এমটাই বক্তব্য অনেকের। এমনকি নিজের গাড়ি চালক, কাজের মেয়ে, পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়েছেন। একই অভিযোগ উঠেছে বর্তমান রেজিস্ট্রার এ কে এম নূর আহমদের বিরুদ্ধেও। সর্বশেষ সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তার ছেলেকে চাকরি দিয়েছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এসব পদগুলোতে শিগগির স্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর