শনিবার, ২২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাসুদার সব পদবি স্থগিতকরণকে ঘিরে জাপায় অস্থিরতা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

অঙ্গীকার বাস্তবায়ন না করায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সংরক্ষিত আসনে দলের মহিলা এমপি অধ্যাপিকা মাসুদা এম এ রশীদ চৌধুরীকে  শোকজ করার এক মাস না যেতেই জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্যপদসহ সব পদবি স্থগিত করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পার্টির সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়ার জন্য ‘পার্টির তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা দেব’ মর্মে প্রত্যেকেই একটি লিখিত চুক্তি করেন। কিন্তু পরে এ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এমপি মাসুদা এম এ রশীদ চৌধুরী। তাই, ২০ মে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা শোকজ করেন মাসুদাকে। তখন মাসুদা মন্তব্য করেন, রাঙ্গা সাহেব  শোকজ করার কে। এক পর্যায়ে মাসুদা তার ছেলে ব্যারিস্টার সানজীদকে বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার কথা জানান। বিষয়টি জানার পর পার্টির মহাসচিবসহ সিনিয়র  নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এদিকে পার্টির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বলছেন, এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। মনোনয়ন বাণিজ্য কম-বেশি সব রাজনৈতিক দলেই হয়ে থাকে, কিন্তু এভাবে লিখিত দলিল করে শর্ত সাপেক্ষে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের জন্য লজ্জার। এ বিষয়ে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান। এদিকে, বার্ধক্যজনিত কারণে খুবই অসুস্থ পার্টির চেয়ারম্যান পার্টির সব পদবি থেকে মাসুদাকে স্থগিত করার চিঠিতে স্বাক্ষর দেওয়ার তথ্যে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) আখতার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্টির মাসিক চাঁদা পরিশোধ না করায় তাকে প্রথমে শোকজ, পরবর্তীতে উত্তর না দেওয়ায় তার সব পদ স্থগিত করা হয়েছে।

দলের ফান্ডে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। দলের মহাসচিব এমন চিঠি দিয়ে থাকলে এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।

এ প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, দল চালাতে অনেক খরচ। দলের দুটি কার্যালয়ে স্টাফ আছেন ৫২ জনের মতো, তাদের  বেতন-বোনাস মিলিয়ে প্রায় ১৬ লাখ টাকা লাগে। এ রকম নানা খরচ রয়েছে। মনোনয়ন দেওয়ার সময় মাসুদা এম এ রশীদ চৌধুরী অঙ্গীকার করেছিলেন যে তিনি চট্টগ্রামে দলকে সুসংগঠিত করতে ভূমিকা রাখবেন, সেখানে অফিস নেবেন, দল চালাবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এ ছাড়া দুই বছর ধরে মাসিক চাঁদা পরিশোধ করেননি। এখানে আর গোপন কোনো অঙ্গীকার ছিল না। উনি (মাসুদা এম এ রশীদ চৌধুরী) লিখিতভাবে সন্তোষজনক কোনো জবাব দেননি। 

এদিকে মাসুদা এম এ রশীদ চৌধুরীর পক্ষে তার ছেলে সানজীদ রশীদ চৌধুরী বলেন, মা’র দলীয় পদ স্থগিতের বিষয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের কিছুই জানেন না। আমার মা নিয়মিত পার্টির চাঁদা পরিশোধ করেন না বলে রাঙ্গা সাহেব মিথ্যাচার করছেন। তিনি যা কিছু করছেন তার ব্যক্তি স্বার্থে করছেন বলেও অভিযোগ করেন ব্যারিস্টার সানজীদ।

সর্বশেষ খবর