রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহীর রাজনীতিতে উপেক্ষিত নারীরা

আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে একই অবস্থা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীতে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের কমিটিতে অবহেলিত নারীরা। গঠনতন্ত্রে ৩০ ভাগ নারী সদস্যের কথা বলা হলেও আওয়ামী লীগ-বিএনপি কেউ সেটি মানছে না। জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য ৭১ জন করে। কিন্তু জেলায় ৫ জন ও নগর কমিটিতে স্থান পেয়েছেন মাত্র ৬ জন নারী। বিএনপির জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫১ জন। এর মধ্যে নারী ১২ জন। মহানগরে পূর্ণাঙ্গ কমিটিই নেই।

আগামী কাউন্সিলকে সামনে রেখে তাই এখন থেকেই সোচ্চার নারী নেত্রীরা। আগামীতে যে কমিটি হবে, সেখানে কমপক্ষে ১০ ভাগ নারীকে স্থান দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নারী নেত্রীরা। এ জন্য তারা কেন্দ্রের পদক্ষেপও চান।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নারী নেত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদটি ছাড়া, প্রতিযোগিতার সুযোগই রাখা হয় না অন্য পদগুলোতে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুরো কমিটি গঠন করেন। ফলে তারা তাদের পছন্দের কয়েকজনকে পদ দেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করেন, তারা থাকেন অবহেলিত। এখন রাজনীতিতে কিছুটা অংশগ্রহণ বাড়লেও নানা প্রতিবন্ধকতা আর নেতৃত্বের মানসিকতার কারণে নারীরা রাজনীতিতে অংশ নিতে পারছে না বলেও অভিযোগ তাদের। নগর মহিলা লীগের সভাপতি সালমা রেজা জানান, নানা রকম প্রতিবন্ধকতা আছে, যেগুলো কাটিয়ে মূল কমিটিতে নারীরা স্থান করে নিতে পারছে না। যোগ্যতা আছে, কিন্তু নারীদের জন্য সুযোগ কম। মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি জাহান পান্না জানান, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে নারীরা দলের মূল কমিটিতে আসতে পারছে না। পুরুষ নেতৃত্ব চায় না নারীরা বড় পদে আসুক। কেন্দ্র থেকে বলার পরেও অনেক সময় স্থানীয় নেতারা নারীদের সদস্যও রাখতে চান না। এখনো বিএনপিতে অনেক যোগ্য নারীকে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে।

তবে দলের মূল নেতৃত্বে সুযোগ পাওয়া নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেণী জানান, ৩০ ভাগ নারীকে পদে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু আগের তুলনায় রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। আগামী কাউন্সিলে তারা কমপক্ষে ১০ ভাগ নারীকে পদে দেখতে চান। এজন্য এখন থেকেই ভূমিকা রাখার কথা জানালেন তিনি।

নেতৃত্বে নারীদের সুযোগ কম দেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করছেন দলগুলোর স্থানীয় নেতারা। তারা বলছেন, আগের চেয়ে অংশগ্রহণ বেড়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মন্টু জানান, আগের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে যে তুলনায় বাড়ার কথা সে তুলনায় বাড়ছে না। এ জন্য দলের চেয়ে রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের সমস্যার কথা বলেন। আর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, আগে তো মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদ ছাড়া নারীদের অন্য পদে দেখা যেত না। এখন নগরে দুজন নারী সহ-সভাপতি। আগামী কাউন্সিলে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ ভাগ নারীকে নেতৃত্বে নিয়ে আসার পরিকল্পনা আছে তাদের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর