মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঘুমিয়ে চট্টগ্রাম জাতীয় পার্টি

কমিটি আছে কর্মসূচি নেই, অভ্যন্তরীণ কোন্দলও চরমে

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

ঘুমিয়ে চট্টগ্রাম জাতীয় পার্টি

সাংগঠনিকভাবে অনেকটা অস্তিত্বহীন চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টি (জাপা) যেন ঘুমিয়ে আছে। তিন সাংগঠনিক কমিটি নামে থাকলেও কার্যক্রম বা কোনো ধরনের কর্মসূচিতে নেই বললেই চলে। দীর্ঘদিন সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকার পাশাপাশি নতুন কমিটি না হওয়ায় নতুন নেতৃত্বও সৃষ্টি হচ্ছে না। তিন সাংগঠনিক কমিটির অধিকাংশ নেতাই দায়িত্বশীল কোনো ভূমিকা পালন করেন না। যারা করছেন, তারাও দৃশ্যমান কর্মসূচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তা ছাড়া কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির নামে মাত্র আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে একটি পরিচিতি সভা করেই সাংগঠনিক তৎপরতা শেষ হয়েছে। বর্তমানে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অসুস্থতায় কোনো মিলাদ মাহফিলও নেই। আছে শুধু চেয়ারের দিকে চোখ। সব মিলে দলীয় কোন্দল ও নানা প্রশ্ন দলীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে। দলের একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, চট্টগ্রাম জাতীয় পার্টির (জাপা) তিন সাংগঠনিক জেলা উত্তর ও মহানগরে দুই কমিটির সদস্যের মধ্যে অধিকাংশই সংগঠনের কাজে নেই। দক্ষিণে নামে মাত্র আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে একটি পরিচিতি সভা করেই কর্মসূচি শেষ হয়েছে। দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটি হলেও এটি নিয়েও রয়েছে কোন্দল ও নানা প্রশ্ন। দলীয় কাজে সভাপতির সঙ্গে সমন্বয় থাকে না সাধারণ সম্পাদকের। এসব কারণে তৃণমূল নেতারা হতাশার মধ্যে দলীয় রাজনীতি করে আসছেন। চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রামে সত্যিকার অর্থে জাপার কর্মকা  নেই বললেই চলে। চট্টগ্রাম মহানগর জাপা সভাপতি-সম্পাকদের মধ্যে নেই সমন্বয়। দ্রুত নতুন কমিটি দেওয়া না হলে অচিরেই দলীয় নেতা-কর্মীরা আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে সংগঠন ছেড়ে দিতে পারেন। তিনি বলেন, তিন সাংগঠনিক কমিটিতে রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। পদ-পদবির জন্য সবাই লবিং ও তদবিরে ব্যস্ত থাকলেও দলের শীর্ষ নেতার অসুস্থতায় নেই সাংগঠনিক কর্মসূচি। দলীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর জাপা দুভাগে বিভক্ত। একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগরের আহ্বায়ক সোলায়মান আলম শেঠ। অন্য অংশের নেতৃত্বে সাবেক এমপি ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মাহজাবীন মোরশেদ ও তার স্বামী মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম। তিনিও জাপার ভাইস চেয়ারম্যান।

 ২০১৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু জাপা মহাসচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই তার সুপারিশে আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে মাহজাবীন মোরশেদকে আহ্বায়ক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির অনুমোদন দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে নগর জাপার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। মাহজাবীন মোরশেদ এমপি সভাপতি ও এয়াকুব হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সম্মেলনের প্রায় সাড়ে ৬ মাস পর চলতি বছরের ২১ মার্চ ১১১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন পায়। এ কমিটিও বিলুপ্ত হয়ে সর্বশেষ নগর জাপার সভাপতি হলেন সোলায়মান আলম শেঠ ও সাধারণ সম্পাদক এয়াকুব আলী। অন্যদিকে গত বছরের ২৯ আগস্ট শফিকুল ইসলাম বাচ্চু চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জাপার সভাপতি ও শফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দেড় মাস পর কেন্দ্র থেকে ১১১ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ এক বছরেও কোনো পরিচিতি সভা হয়নি। শুরুই হয়নি সাংগঠনিক কার্যক্রম। এদিকে গত বছরের অক্টোবর মাসে দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির ১১১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সাংগঠনিক কর্মকা  না থাকায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যে কারণে  কোনো অভিষেক অনুষ্ঠান হয়নি। পরে নামে মাত্র একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

সর্বশেষ খবর