শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিএনপির ২৬ উপ-কমিটি হয়নি তিন বছরেও

মাহমুদ আজহার

বিএনপির ২৬ উপ-কমিটি  হয়নি তিন বছরেও

বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। ওই কাউন্সিলে চূড়ান্ত হওয়া গঠনতন্ত্রে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ২৬টি উপ-কমিটি করার কথা ছিল। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বিএনপি মন্ত্রণালয়ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠন করতে পারেনি। প্রতিটি কমিটিতে ১০ জন করে অন্তর্ভুক্ত হলেও ২৬০ নেতার পদায়ন করা যেত উপ-কমিটিতে। জানা যায়, ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতার নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা এ নিয়ে কাজ শুরু করেন। কয়েকটি কমিটির খসড়াও করেন তারা। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হয়নি। এরপর এ নিয়ে বিএনপিতে হৈচৈ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া প্রচার প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে ছাত্রলীগের এক নেতার নাম আসায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সমালোচনার মুখে এসব কমিটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বিএনপির উপ-কমিটি গঠনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছিল। প্রতিকূল নানা পরিস্থিতির কারণে তা আর হয়নি। এখন আবার কাউন্সিলের সময় চলে এসেছে। দেখা যাক সামনে কী হয়।’

জানা যায়, প্রতিটি উপ-কমিটিতে একজন করে চেয়ারম্যান ও একজন সদস্য সচিব থাকবেন। তাদের সঙ্গে অন্তত ১০ জন করে সদস্য থাকবেন। শুধু চেয়ারম্যান ছাড়া এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কেউ বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হতে পারবেন না। দলীয় একাধিক নেতা বলেন, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠিত হলে অনেক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। বিশেষ করে সাবেক একঝাঁক ছাত্রনেতাকে

এই কমিটিগুলোতে নেওয়া যাবে। বিএনপির কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থ ও পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, নারী ও শিশু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, শিল্প ও বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি, আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, যুব উন্নয়ন, শ্রম ও প্রবাসীকল্যাণ, যোগাযোগ ও গণপরিবহন, শক্তি ও খনিজ সম্পদ, গবেষণা, মানবাধিকার, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মুক্তিযুদ্ধ, ক্ষুদ্রঋণ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, সুশাসন ও জনপ্রশাসন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জাতীয় সংহতি ও এথনিক মাইনোরিটি বিষয়ক উপ-কমিটি প্রভৃতি। জানা যায়, শুধু উপ-কমিটিই নয়, বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে স্থায়ী কমিটিসহ কয়েকটি পদ শূন্য ছিল। এরপর কেউ কেউ মারাও যান। কিন্তু তা পূরণ করেনি দলটি।

সর্বশেষ দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি। এরপরও স্থায়ী কমিটিতে তিনটি পদ খালি আছে। ছাত্রবিষয়ক ও যুববিষয়ক সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক দুটি পদও পূরণ করা হয়নি। তবে এসব পদ শূন্য থাকা অবস্থায় আবারও কাউন্সিলের চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি। জানা যায়, আগামী অক্টোবরকে টার্গেট করে সপ্তম জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্ব নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা চলছে। দলের স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে সর্বস্তরের কমিটিতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা গুরুত্ব পাবেন বলে জানা গেছে। প্রবীণ নেতাদের ঠাঁই হবে উপদেষ্টা কমিটিতে। দলটি মনে করছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দলের প্রধান বেগম জিয়া মুক্তিলাভ করতে পারেন। তার মুক্তির পরপরই কাউন্সিল করার চিন্তাভাবনা চলছে। কারাবন্দী বেগম জিয়ার ‘সবুজ সংকেত’ নিয়েই কাউন্সিলের প্রাক প্রস্তুতির দিকে এগোচ্ছে দলটি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বেশির ভাগ পদ পূরণ হলেও কিছু পদ এখনো খালি আছে, এটা ঠিক। তাই বলে তো দলের কার্যক্রম থেমে  নেই।  জেলা কমিটি হচ্ছে, অঙ্গ সংগঠনের কমিটি হচ্ছে। এখন আমরা জাতীয় কাউন্সিল করার চিন্তাভাবনা করছি। আমরা আশা করছি, আমাদের চেয়ারপারসন শিগগিরই মুক্তি পাবেন। তাকে নিয়েই আমরা কাউন্সিল করতে চাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর