শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

অযোগ্য নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে চলছে নিরাপত্তা দফতর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

বাইজিদ ইমন, চবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় তখন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গঠন করা হয় ‘নিরাপত্তা দফতর’। প্রতিষ্ঠালগ্নে নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়ে আসছে বলে এই দফতরটি প্রতিষ্ঠা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুরু থেকে দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হতো এ দফতরটি। কিন্তু বর্তমানে নিরাপত্তা কর্মীদের খেয়ালিপনা, অযোগ্যতা ও প্রশিক্ষণের অভাবের কারণে প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে চবির নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হুমকির মুখে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। জানা যায়, প্রতিষ্ঠার শুরুতে মাত্র ১ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও কিছু প্রহরীর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে চবির নিরাপত্তা দফতরটি। সেনাবাহিনীর মেজর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা মেজর (অব.) গোলাম কিবরিয়া অবসরের পর তাকে ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চলে এ নিরাপত্তা দফতরের কার্যক্রম। বর্তমানে ডেপুটি  রেজিস্ট্রারের পদমর্যাদার একজন দায়িত্ব পালন করছেন এই দফতরটিতে। বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্সে নিরাপত্তা প্রহরীরা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক এবং বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানদের নিয়োগ দেওয়ার বিধান থাকলেও এখানে কিছু সাধারণ মানের প্রহরী দিয়েই দফতর পরিচালিত হচ্ছে, যাদের প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। জানা যায়, বর্তমান নিরাপত্তা দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বজল হক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে কর্মরত। সার্টিফিকেট কেলেঙ্কারির সময়ে বজলকে লঘু দ  দিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে প্রেরণ করা হয় বলে জানা যায়। এক নিরাপত্তাজনিত কেলেঙ্কারিতে অপসারিত ব্যক্তিকে সামগ্রিক নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু নিরাপত্তা দফতরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর মেজর পদমর্যাদার ব্যক্তিবর্গের।

 সেই হিসাবে বর্তমান নিরাপত্তা দফতরের প্রধান বজল হকের শারীরিক দেহভঙ্গি তো দূরের কথা কোনো সাধারণ যোগ্যতা ও দক্ষতা এমনকি নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ।

এ ছাড়া নিরাপত্তা দফতরের প্রহরীরা অধিকাংশই নিকটস্থ এলাকা জোবরার অধিবাসী। ফলে স্থানীয়রা যখন পাহাড়ে আগুন দেয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কেটে নিয়ে যায়, অন্যান্য বনজ সম্পদ পাচার করে তখন এসব নিরাপত্তারক্ষী যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে না। তখন স্বজনপ্রীতিতে মগ্ন থাকে নিরাপত্তারক্ষীরা। এতে প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হুমকির মুখে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। এমনকি অনেক নিরাপত্তা কর্মী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যখন মেজর গোলাম কিবরিয়া দায়িত্বে ছিলেন তখন অস্ত্রধারী প্রহরী ছিল বিশজন। তাদের নিয়ে প্রতিদিন সকালে প্রশিক্ষণ প্রদান করতেন। সাধারণ প্রহরীদের নিয়মিত প্যারেড করাতেন। যার কারণে তখন নিরাপত্তা ছিল জোরদার। তখন প্রহরীরাই পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধান করত। আর এখন নিরাপত্তা দফতরের সমস্যা সমাধান করতে হয় প্রক্টর অফিসকে। নিরাপত্তা দফতরের কাজ নিয়ে প্রায় সময় ব্যতিব্যস্ত থাকতে দেখা যায় প্রক্টর অফিসকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সেখানে দক্ষ কিছু প্রহরী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আশা করি আগের ধারাবাহিকতা চলে আসবে।

সর্বশেষ খবর