সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

পাহাড় ধসের শঙ্কা

মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বাস করছে ৮৩৫ পরিবার

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

পাহাড় ধসের শঙ্কা

চট্টগ্রামের চিহ্নিত অতিঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বাস করছে ৮৩৫টি পরিবার। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় ও পরিবার চিহ্নিত। পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদে বৈঠক হয়, সিদ্ধান্ত হয়। বর্ষা এলে নিয়ম করে উচ্ছেদও হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় তারা আবারও ফিরে আসে সেই মৃত্যুকূপে।

এসব মৃত্যুকূপে প্রতিবছরই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। এর মধ্যে ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের সাতটি স্থানে পাহাড়ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০০৮ সালে মতিঝর্ণা এলাকাতেই চার পরিবারের ১২ জন, ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগার পাস বাটালি হিলে ধসে ১৭ জন, ২০১৭ সালের ১১ জুন রাতে ১২ জন এবং ২০১৮ সালে চারজনের মৃত্যু হয়। জানা যায়, গত শনিবার থেকে চট্টগ্রামে কখনো মুষলধারে, কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ায় আবার পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রামসহ তিন সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে পাহাড়ের বাসিন্দাদের সরাতে ৮টি আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করেছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নগরের ছয়টি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখাকে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় করা হয়েছে মাইকিং। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ঝুঁকিপূর্ণ ২৮টি পাহাড়ের ১৭টি অতিঝুঁকিপূর্ণ। এসব পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে বাস করছে ৮৩৫টি পরিবার। এর মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন ১০ পাহাড়ে অবৈধভাবে বাস করছে ৫৩১ পরিবার এবং সরকারি ৭ পাহাড়ে বাস করছে ৩০৪ পরিবার। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে এসব পাহাড় এবং পরিবারের তালিকা আছে। অভিযোগ আছে, পাহাড়ের আশপাশের স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাহাড় কিংবা পাহাড়ের পাদদেশ কেটে-সমতল করে কাঁচা-পাকা ঘর নির্মাণ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এসব পাহাড়ে অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘পাহাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য পাহাড় সংলগ্ন ৮টি আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। গত শনিবার থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় এলাকায় মাইকিং এবং আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনা খাবার ও পানি মজুদ রাখা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় জেলা প্রশাসনের ছয় সহকারী কমিশনার এবং  জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর