বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরোয়ানাভুক্ত আসামির সঙ্গে ওসির গোপন সভা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের আজিজুর রহমান (৪৫) ও জালাল উদ্দিনের (৪২) নামে তিনটি মামলা আছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে। পুলিশ এখনো তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের সঙ্গে ‘গোপন সভা’ করার অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোতালেবের বিরুদ্ধে। গত রবিবার বিকালে দুর্গাপুর পৌরসভা ভবনে তারা এ সভা করেন বলে জানা গেছে। সেখানে দুই আসামি আজিজুর রহমান ও জালাল উদ্দিন ছাড়াও পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তবে মেয়র বলেছেন, অন্য একটি কাজে ওসি পৌরসভায় এসেছিলেন। কোনো মামলার বিষয়ে আলাপ হয়নি। আর ওসি আবদুল মোতালেব পৌরসভায় যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। মামলা তিনটির বাদী দেবীপুর গ্রামের আবদুল আওয়াল নামে এক মাছচাষি। দুর্গাপুর সদরে তার মাছের খাবারের দোকান আছে। আওয়াল অভিযোগ করে আসছিলেন, গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা চাইছেন। চাঁদা না দেওয়ার কারণে সম্প্রতি তার ২৫ বিঘার পুকুরে বিষ ঢেলে ৪০০ মণ মাছ নিধন করা হয়েছে। পুকুরপাড়ের গাছের আমও নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে দুটি মামলা করেন তিনি। এসব মামলায় মোট পাঁচজনকে আসামি করেন। এদের মধ্যে একজন আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।

আওয়াল জানান, অন্য চারজন আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ গ্রেফতার করেনি। এরই মধ্যে গত ২৮ জুন বাড়ি থেকে দোকানে টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে পরোয়ানাভুক্ত আসামিরাই তাকে পিটিয়ে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। হাসপাতালে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তিনি এ ঘটনায় আরেকটি মামলা করেন। এ মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়। আওয়াল বলেন, তৃতীয় মামলার সাত আসামির মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। কিন্তু পুলিশ কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করছে না। এরই মধ্যে গত রবিবার বিকালে দুর্গাপুর পৌরসভা কার্যালয়ে দুই পরোয়ানাভুক্ত আসামির সঙ্গে সভা করেন ওসি আবদুল মোতালেব।

গোপন সভার বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘পৌরসভা কার্যালয়ে যে কেউ আসতে পারেন। মামলার আসামিরাও হয়তো এসেছিলেন। তবে তাদের সঙ্গে আমি কিংবা ওসি বসিনি। ওসি পৌরসভায় এসেছিলেন অন্য একটি কাজে।’

ওসি আবদুল মোতালেব বলেন, ‘সব মিথ্যা কথা। মামলার তদন্ত চলছে। আর আমি মেয়রের চাকরি করি না যে তাকে মামলার অগ্রগতি জানাতে হবে।’ ওসি পৌরসভায় আসামিদের সঙ্গে গোপন সভা করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আসামিদের খুঁজছি। পাওয়া গেলেই গ্রেফতার করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর