শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

অর্থাভাবে উন্নয়ন হচ্ছে না বগুড়া পৌরসভায়

সাক্ষাৎকারে
মেয়র মাহবুবর রহমান

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

অর্থাভাবে উন্নয়ন হচ্ছে না বগুড়া পৌরসভায়

বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান বলেছেন, অর্থাভাবে বগুড়া পৌর এলাকার উন্নয়নকাজ হচ্ছে না। মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সব উন্নয়নকাজ। যুগ যুগ ধরে কেবল কথা চালাচালি হচ্ছে বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়ে। গত মঙ্গলবার বগুড়ায় নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। মাহবুবর রহমান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। তিনি বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার তিনবারের মেয়র। মাহবুবর রহমান বলেন, শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া রেললাইন সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি। রানওয়ের অভাবে আজও চালু হয়নি বিমানবন্দর। পৌর এলাকা দিয়ে       বয়ে যাওয়া করতোয়া নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত আলো, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, বেকারদের জন্য ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠা, পৌর এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা আজও হয়নি। দিনের পর দিন নানা দুর্ভোগ আর ঝক্কি-ঝামেলা নিয়ে চলছে বগুড়া পৌরসভা। তিনি বলেন, পরিকল্পনা আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন করতে গেলে যে ধরনের সহযোগিতা আবশ্যক তা পাওয়া যাচ্ছে না। বগুড়া পৌরসভায় বরাদ্দ অপ্রতুল। আর এ বরাদ্দ দিয়ে সব কাজ করা যায় না। সাক্ষাৎকারে বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান বলেন, ২১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বগুড়া পৌরসভা প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের। জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬ লাখ। গত অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬৫ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ৭৭ লাখ। কুমিল্লা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের চেয়ে আয়তনে এবং জনসংখ্যায় বড় বগুড়া পৌরসভা। ‘ক’ শ্রেণির এ পৌরসভাটি আয়তনে বড় হলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ পায় অন্যান্য পৌরসভার মতোই। তিনি বলেন, জেলার অন্য ১২টি পৌরসভার মতোই এ পৌরসভারও বাজেট সমান! এ ছাড়া কাঁচা সড়ক, সিসি, আরসিসি, সেলিংসহ অন্যান্য রাস্তা রয়েছে আরও প্রায় ৬০০ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার রাস্তা আছে। এ রাস্তা সংস্কার কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় রাস্তা ও ড্রেনগুলো সংস্কার যাচ্ছে না।

মেয়র বলেন, বগুড়া পৌর এলাকায় মাত্র দুটি সরকারি স্কুল। একটি বালক, অন্যটি বালিকা। এই সরকারি দুটি স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি বছর অংশগ্রহণ করে কমপক্ষে ৮ হাজার শিক্ষার্থী। এটি সুশিক্ষার জন্য বড় চাপ। এ চাপ কমাতে হলে পৌর এলাকায় আরও চারটি সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ২০০০ সালের আগে বগুড়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কথা শুরু হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত শুধু কথাই চলছে। কাগজে কলমে কেউ কাজটি শুরু করেনি। তিনি বলেন, সরকারি আজিজুল হক কলেজে এখন শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। তার পরও এ কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ পায়নি। প্রাইমারি হেলথ কেয়ার ছিল বগুড়া পৌর এলাকায়। তিনটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গরিব ও অসহায়দের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হতো। অর্ধেক খরচে রোগীরা সেবা পেয়ে সন্তুষ্টও ছিল। কিন্তু এখন আর এ সেবা পৌর এলাকায় না থাকায় গরিবদের চিকিৎসাসেবা পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বগুড়া শহরে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন শ মানুষ ফুটপাথে, রেলস্টেশনে, বিভিন্ন সড়কে, গলিমুখে, দোকান শেডের নিচে অনিরাপদ অবস্থায় ঘুমায়। তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় করার আবশ্যকতা রয়েছে। তারা সেখানে ঘুমাবে, গোসল সারবে, পয়ঃনিষ্কাশন করবে। মেয়র বলেন, বগুড়া পৌরসভায় প্রায় ৯০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী এ পৌরসভায় মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পাওয়ার কথা ১৬৪ জনের। সেখানে নিয়োগ পেয়েছেন ৮৮ জন। এতগুলো পদ এখনো পূরণ হয়নি।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর