রাজশাহীতে এক সময় বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন প্রবীণ নেতা এমরান আলী সরকার, অ্যাডভোকেট আবদুল হাই, অ্যাডভোকেট এখলাক হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল মনির। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা ও নগর বিএনপির নেতৃত্বে আসেন মিজানুর রহমান মিনু ও নাদিম মোস্তফা। কিন্তু মিনু-নাদিমের বিদায়ের পর বেহাল রাজশাহী বিএনপি। দ্বন্দ্বে আর গ্রুপিংয়ে নিষ্ক্রিয় তুখোড় নেতারা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সময়ের তুখোড় নেতা ছিলেন মিজানুর রহমান মিনু ও নাদিম মোস্তফা। ১৯৯৬ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসা সত্ত্বেও রাজশাহীর তৎকালীন ৫টি আসনেই বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় এলে ৫টি আসনেই বিএনপির তৎকালীন ৫ তুখোড় নেতা এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওইসময় রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃত্বেও ছিলেন এই ৫ এমপি। বিশেষ করে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন, তৎকালীন রাজশাহী-২ আসনের এমপি মিজানুর রহমান মিনু ও সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা ছিলেন রাজশাহীর রাজনীতির অন্যতম নাম।
পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপির নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। সেই পরিবর্তনের ধারায় এখন বিএনপির ওই নেতারা অনেকটাই ব্যাকফুটে। এর মধ্যে ব্যারিস্টার আমিনুল হক সম্প্রতি মারা যাওয়ায় রাজশাহীর ওই আসনটিতে বিএনপি প্রায় নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে। অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন বয়সের ভারে নিষ্ক্রিয়। মিজানুর রহমান মিনুকে রাজশাহীর নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়ায় তিনিও ব্যাকফুটে। তার পরিবর্তে ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি করা হয় সদ্য সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে। কিন্তু গত আড়াই বছরেও নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি বুলবুল-মিলন। সাবেক এমপি আবু হেনা রাজশাহী-৪ আসন থেকে গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে লড়েছেন। কিন্তু নির্বাচনের ১৫ দিন আগে থেকে এলাকাতেও ঢুকতে পারেননি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের আক্রমণের ভয়ে। নির্বাচনের পর থেকে আবারও ঢাকায় তিনি। একসময়ের আরেক তুখোড় নেতা সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফাকে জেলা বিএনপির সভাপতি থেকে সরানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। তার পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সদ্য সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুকে। কিন্তু তিনিও দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করতে পারেননি। ২০১৬ সালের পর থেকে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় নাদিম মোস্তফা। জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক নেতা সাজেদুর রহমান খান মার্কনি, সাইদুর রহমান মন্টু রাজনীতিতে অনেকটা নিষ্ক্রিয়। কারণ হিসেবে অনেক নেতাই বলেছেন, জেলা ও নগর কমিটির শীর্ষ নেতারা অন্যদের রাজনীতি করার সুযোগ রাখেননি। তবে সম্প্রতি জেলা কমিটি বাতিল করে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘দলের মধ্যে কিছুটা বিরোধ আছে। বিএনপি বড় দল হিসেবে এগুলো থাকবেই। তবে আমরা দ্রুত সেটি কাটিয়ে উঠব।