শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনিশ্চিত

মাঠের অনুমতি মেলেনি, হাতে মাত্র একদিন

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশ। আগামী ২০ জুলাই এই মহাসমাবেশ নগরীতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত কোনো মাঠ ব্যবহারের অনুমতি মেলেনি। চট্টগ্রাম বিএনপির পক্ষ থেকে লালাদীঘির ময়দান, প্যারেড মাঠ, বাংলাদেশ রেলওয়ের ফলোগ্রাউন্ড মাঠ, আউটার স্টেডিয়াম, জেলা পরিষদ চত্বরসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুগুলোর অনুমতি চাওয়া হলেও কোথাও গতকাল পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক ফল মেলেনি। সমাবেশের মাত্র একদিন সময় হাতে থাকলেও গতকাল পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোথাও সমাবেশের অনুমতি বা অনুমোদন মেলেনি। নানা অজুহাত দেখিয়ে মাঠ বরাদ্দে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান নগর বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর এটাই সবচেয়ে বড় কর্মসূচি চট্টগ্রাম বিএনপির। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রের প্রায় সব শীর্ষ নেতারা এই মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিভাগীয় এই সমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন করেছেন। সর্বশেষ গত বুধবার বিকালেও দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভা করেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে প্রত্যেক ওয়ার্ড ও থানা বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মকৌশল ও দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। সমাবেশ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে করতে চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপির নেতারা পৃথক পৃথক দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিভাগীয় সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এতে লিখিত বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রতিহিংসা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করছে। আমরা আমাদের নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যাব। আমরা আশা করছি প্রশাসন আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সফল করতে সহযোগিতা করবে।’

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘আমরা এই মহাসমাবেশ করবই। এটা কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিভাগের সব নেতারা উপস্থিত থাকবেন। যেহেতু এটা আমাদের পূর্বঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আমাদের প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বাধা দিলেও আমরা করব। কোথাও অনুমতি না দিলেও আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে হলেও করব।’

এদিকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আবদুল ওয়ারিশ বলেন, ‘বিএনপি তাদের সমাবেশের জন্য নগরীর একাধিক মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে। লালদীঘির মাঠে বৃক্ষমেলা চলছে, সুতরাং সেখানে হবে না। কিন্তু এখনো অন্য কোথাও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাদের আবেদনগুলো বিবেচনাধীন রয়েছে। যেহেতু নিরাপত্তার একটি বিষয় রয়েছে এবং জনভোগান্তির বিষয় রয়েছে। ফলে এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা তাদের মাঠ ব্যবহারের সুযোগ দিতে পারব কি পারব না তা নির্ভর করবে।’

নগর বিএনপির সহদফতর সম্পাদক ইদ্রিচ আলী বলেন, আমরা যথাযথ নিয়ম মেনেই আবেদন করেছি। বিএনপির মতো একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলকে সমাবেশ করার অনুমতি না দিয়ে সরকার ও প্রশাসন এর আগেও হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সভা-সমাবেশ করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। এবারও যদি তাই হয়, তাহলে এর জবাব সময় হলে এদেশের সাধারণ জনগণ দিয়ে দেবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর